দ্রুত বাড়ছে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা, সতর্কতাই প্রতিরোধের একমাত্র পথ

অশোক সেনগুপ্ত, আমাদের ভারত, ৪ ফেব্রুয়ারি: দ্রুত বাড়ছে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা। সতর্কতাই প্রতিরোধের একমাত্র পথ। শনিবার বিশ্ব ক্যান্সার দিবসে এভাবেই অভয় দিলেন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা। দিলেন সচেতনতার পাঠ। বললেন, কোনও অসুখের প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করলে লড়াই অনেক সহজ হয়, বিশেষ করে ক্যানসারের ক্ষেত্রে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু)-র হিসেবে ২০২০ সালে বিশ্বের ২৩ লক্ষ মহিলা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, এঁদের মধ্যে ৬,৮৫০০০ জন মারা গেছেন। ২০২০-র শেষের দিকে প্রায় ৭৮ লক্ষ মহিলা স্তন ক্যান্সার নিয়ে জীবন যাপন করছেন। আমাদের দেশের মহিলাদের মধ্যেও স্তন ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়ছে। বেশিরভাগ সময়ই রোগীরা যখন আসেন তখন ক্যান্সার অনেকটাই ছড়িয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। অথচ একটু সতর্ক হলেই প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়।

এই উদ্দেশ্যেই এদিন সিএনসিআই এর মোবাইল ম্যামোগ্রাফি ইউনিট শুরু করা হল। ৪০ পেরোনর পর ম্যামোগ্রাফি করিয়ে নেবার পরামর্শ দেওয়া হলেও গ্রামে বা মফঃস্বলে এই পরীক্ষার সুবিধে পাওয়া মুশকিল। মোবাইল ম্যামোগ্রাফি ইউনিট প্রত্যন্ত গ্রাম ও মফঃস্বল অঞ্চলের মহিলাদের প্রাথমিক স্তরে ক্যান্সার নির্ণয়ে সাহায্য করবে।

সিএনসিআই-এর রাজারহাট ক্যাম্পাসে এই মোবাইল ম্যামোগ্রাফি ইউনিটটির উদ্বোধন করলেন হিডকোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং নিউটাউন ডেভলপমেন্ট অথরিটির (এনকেডিএ) চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। সিএনসিআই এর অধিকর্তা ডা: জয়ন্ত চক্রবর্তী, মেডিকেল সুপারিন্টেনডেন্ট ডা: শঙ্কর সেনগুপ্ত সহ হাসপাতালের অন্যান্য ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। ২০২২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার ডে-র থিম “ক্লোজ দ্য কেয়ার গ্যাপ”। এই বছরের পরিকল্পনা –“ইউনাইটিং আওয়ার ভয়েস অ্যান্ড টেকিং অ্যাকশন”। সিএনসিআই এই কাজ করে চলেছে ৭৩ বছর যাবৎ। প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালের ১২ জানুয়ারি আইরিন ক্যুরি এই ক্যান্সার হাসপাতালটি উদ্বোধন করেছিলেন।

ডাঃ জয়ন্ত চক্রবর্তী জানালেন যে সিএনসিআই নিয়মিত বিভিন্ন জায়গায় ক্যান্সার স্ক্রিনিং ক্যাম্প করে, এর সঙ্গে সংযোজন হল প্রাথমিক অবস্থায় স্তন ক্যান্সার নির্ণয়। ম্যামোগ্রাফি ব্যাপারটা যে খুব নতুন কিছু তা নয়, কিন্তু প্রয়োজন থাকলেও অনেক মা বোনেরা এই রোগ নির্ণয় পদ্ধতির সুবিধে নিতে পারেন না।

মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট ডাঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত জানালেন আশা করা যায় সিএনসিআই এর মোবাইল ম্যামোগ্রাফি ইউনিটের সাহায্যে প্রাথমিক স্তরে ক্যান্সার নির্ণয় করে যথাযথ চিকিৎসায় তাঁদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব হবে। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী যোগ্যতাসম্পন্ন ম্যামোগ্রাফি টেকনিশিয়ান পরীক্ষা করবেন।

হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আশা প্রাথমিক অবস্থায় স্তন ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসায় এই রোগে মৃত্যুর হার অনেকটাই কমানো যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *