দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই চোপড়ার নন্দকিশোরগছের মানুষ ফের মেতে উঠেছে দুর্গাপুজোর আনন্দে

স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ২১ অক্টোবর: দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের দুর্গাপুজো। চোপড়ার নন্দকিশোরগছের মানুষ এই অষ্টমঙ্গলি দুর্গাপুজোকে ঘিরে রীতিমতো মেতে উঠেছেন। এই পুজোকে কেন্দ্র করে প্রাচীন জহড়া মেলা এই পুজোর উদ্দীপনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে আরও কয়েকগুণ। জহরা পাল নামে এক ব্যক্তি স্বপ্ন দেখে। তারপর থেকে তিনি এই পুজো ও মেলার আয়োজন করে। তিনি মারা যাওয়ার পর তার নামেই এই মেলার নাম হয় জহরা মেলা। তার মৃত্যুর পর এই পুজো বারোয়ারি পুজো হিসাবে স্থানীয় বাসিন্দারা এই পুজো করে চলেছেন।

উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া থানার নন্দকিশোরগছ এলাকার এই দুর্গাপুজো এবার ১৩৪ বছরে পা দিল। শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোতে এখনও প্রাচীন রীতি মেনেই চলে। সব ধর্মের মানুষ উপস্থিত হন এখানে। কয়েক লক্ষ লোকের সমাগম হয়। দর্শনার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে বিষয়ে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই বছর এই পুজো ও মেলা ১৩৪ বছরে পা দিল। বিহার, বাংলা, নেপাল, বাংলাদেশ সহ হাজারো মানুষের ভিড়ে রীতিমতো জমে ওঠে এই জহড়া মেলা। সেখানে উপস্থিত হন অসংখ্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। আর তাই এই মেলা হয়ে উঠেছে এক সম্প্রীতির মেলা।

দুর্গাপুজো শেষ হবার আটদিনের মাথায় এই পুজো শুরু হয় বলে একে অষ্টমী দুর্গা পুজো হিসেবে অনেকেই অভিহিত করেন। আজ এই অষ্টমঙ্গলি দুর্গা দেবীর পুজো। শুক্রবার থেকে তিনদিন ধরে চলবে মেলা। এই মেলার বিশেষত্ব যে এখানে বাগচারা নামে একটা ফল পাওয়া যায়। যে ফল আর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। একই চালার মধ্যে রয়েছে দুর্গা, দুর্গার পাশাপাশি শিব, নারায়ণ, কামদেব সহ আঠাশ রকমের মূর্তি স্থান পেয়েছে সেখানে। একসময় এই মেলাতে তাল পাতার ভেঁপু, মাটির খেলনা পুতুল এবং বিভিন্ন হাতের কাজের সামগ্রী বিক্রি হতো এখন সেসবের তেমন কোনও চাহিদা না থাকলেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ফিরেছে কিছুটা আধুনিকতা। বিশেষ করে ফাস্ট ফুড ও প্রসাধনী জিনিসের দোকানই বেশি। তবে রয়েছে নাগর দোলা সহ শিশুদের মনোরঞ্জনের একাধিক ব্যবস্থা। চোপড়া থানার আইসি হেমন্ত কুমার শর্মা, ডিএসপি ডিইবি ধ্রুব প্রধান আজ এই মেলা পরিদর্শন করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলা উপলক্ষ্যে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে।আজ মেলার বিভিন্ন দোকানপাট সহ মন্দির পরিদর্শন করেন চোপড়া থানার আইসি সহ ডিএসপি, ডিইবি ধ্রুব প্রধান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *