“আমাদের এখন যা ক্ষমতা পশ্চিম বঙ্গের এক একটা থানাকে গুড়িয়ে দিতে পারি”, পুরুলিয়ায় রাজু ব্যানার্জির হুংকার

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ৪ অক্টোবর: “পশ্চিমবঙ্গে আমাদের যা ক্ষমতা আছে আমরা যদি মনে করি এক একটা থানাকে পুড়িয়ে দিতে পারি।” পুরুলিয়ায় এই ভাবেই রাজ্য পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে কাটমানি তোলার অভিযোগ তুলে হুংকার দিলেন রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি এবং রাঢ় বঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু ব্যানার্জি। কেন্দ্র সরকারের কৃষি আইনের সমর্থনে পুরুলিয়া শহরে দলীয় ‘কৃষক সুরক্ষা পদযাত্রা ‘ কর্মসূচিতে পথ সভায় এই কথা বলেন তিনি।

এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজু তৃণমূল শাসন কালে বিজেপি নেতা ও কর্মী খুনের প্রসঙ্গ তুলে পুলিশকে এক হাত নেন বিজেপি এই নেতা।  তিনি সভায় পুলিশের উপস্থিতিতেই বলেন, “পুরুলিয়ায় বিজেপি কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে, রাজ্যে পুলিশের গুলিতে হত্যা করা হয়েছে বিজেপি কর্মীদের। আর তৃণমূলের বন্ধুরা ভাবছেন আপনাদের কিছু হবে না। আমি এখানে দাঁড়িয়ে বলে যাচ্ছি কোন আদালত দরকার হবে না। যারা খুনি আছে চুন চুন কে মারেঙ্গে। কেউ ছাড় পাবে না। যারা আজকে মদত দিয়েছে তাদের কী অবস্থা হবে? তাদেরও ব্যবস্থা নেব। আর কয়েক দিন পর আপনারা দেখবেন পুলিশে পুলিশে লড়াই হবে। এখন যেমন তৃণমূলে তৃণমূলে লড়াই হচ্ছে। আর কয়েকদিন পরে দক্ষ পুলিশ আর তৃণমূলের পুলিশে লড়াই হবে। আমরা যদি মনে করি পশ্চিমবঙ্গে যা ক্ষমতা আছে এক একটা থানাকে আমরা গুড়িয়ে দিতে পারি “এদিন পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে তৃণমূলের যোগ সাজোশে কাট মানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে বিজেপি এই রাজ্য নেতা বলেন, “কাটমানি খাওয়া পুলিশগুলোকে তুলে নিয়ে গিয়ে তৃণমূলের অফিসে বসিয়ে দেব, থানায় আর রাখব না।”

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজু বলেন, “করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর মমতা ব্যানার্জি। করোনার থেকে তার দলের করুনায় বিরোধীরা ও বিজেপি কর্মীরা মারা গিয়েছে। দিদিমনির জন্য জঙ্গলমহল থেকে পাহাড় পর্যন্ত একটা পর একটা মানুষ মারা গেছে। অতি ভয়ঙ্কর দিদিভাই কর্নার থেকে ভয়ঙ্কর তার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মৃত্যুর মিছিল হয়েছে। ”

চলতি মাসের ৮ তারিখে দলের নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে, “বিজেপি রাজ্য নেতা বলেন ঐদিন নবান্ন অভিযান নয় একেবারে দখল করে নেব।”

এছাড়াও  তিনি সভায় বলেন, “একদিকে আমরা কৃষকদের সুরক্ষার জন্য রাস্তায় নামছে আর দিদিমণি ফড়েদের সুরক্ষার  রাস্তায় নামছেন।”

এদিনের এই পদযাত্রা পুরুলিয়া শহরের রেল স্টেশন থেকে শুরু হয়ে মেন রোড চক বাজার হয়ে  ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে পৌঁছায়। সেখানে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।  বক্তব্যে তৃণমূলের কৃষক আইনের বিরোধিতা  নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম নেতা রাজু। তিনি দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গে ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। অথচ এক টাকা অনুদান ওই কৃষকরা পাননি। অন্যদিকে এই রাজ্যে চুল্লু খেয়ে মারা গেলে দু লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করা হয় বলে কটাক্ষ করেন এই বিজেপি নেতা।  এছাড়া এ রাজ্যের ফর এরা প্রত্যেকেই তৃণমূল নেতা বলে অভিযোগ করেন তিনি। কেন্দ্রের কৃষি আইন নিয়ে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্র কৃষি সুরক্ষা পদযাত্রায় মানুষের ঢল নামে বলে জানান বিজেপি নেতা রাজু ব্যানার্জি। সরাসরি তৃণমূল সুপ্রিমো এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে এই বিজেপি নেতা বলেন,  “তাই দেখে দিদিমণি ভয় পেয়ে গেছেন। তাই তিনি এখন কি সকাল থেকে চোখ ঘোরানোর জন্য উত্তরপ্রদেশে চলে গেছেন। দিদিভাই আর চিন্তা করবেন না আর মাত্র ৬ মাস তারপরে তৃণমূলের সর্বনাশ আমরা উত্তরপ্রদেশে স্থায়ী বাসিন্দা মানুষের চিন্তা করবেন না।”  বক্তব্যে কেন্দ্রের কৃষক সম্মান নিধি প্রাপ্য টাকা অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে এই রাজ্যের গরিব কৃষকরা কেন পাবেন না সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতা রাজু ব্যানার্জি।

দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন সাংসদ এবং রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। তিনি আলুর চড়া দাম নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হন। আলু নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন সাংসদ জ্যোতির্ময়।  দলীয় এই কর্মসূচিতে অংশ নেন জেলা বিজেপি সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী সহ অন্যান্য জেলা সংগঠক ও পদাধিকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *