সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২৭ এপ্রিল: রাজ্যে যে লকডাউন বাড়ছে, তা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিকেলে নবান্নে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রের একের পর এক নির্দেশিকা জারি নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের এই দ্বিচারিতা নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে জানিয়েছেন, এবার রাজ্যকে রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোনে ভেঙে তারা নিজেরাই নজরদারি চালাবেন।
তিনি এ দিন ঘোষণা করেন, ‘কেন্দ্র যেমন নির্দেশ দিচ্ছে, তাতে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে বাংলাতে ২১ মে পর্যন্ত এখনকার মতো পরিস্থিতি রাখার চেষ্টা করব আমরা। কিন্তু সাধারণ মানুষের স্বার্থে রেড-অরেঞ্জ ও গ্রিন জোনের তালিকা তৈরি করেছে রাজ্য। রেড জোনে কড়াকড়ি থাকবে। গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনে একটু ছাড় দেওয়া হবে।’ তাঁর কথায়, ‘লকডাউন নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেন্দ্র নিক। রাজ্যকে তো আমাদেরই চালাতে হবে। রাজ্য যদি জোন হিসেবে তালিকা প্রকাশ করে, তাহলে মানুষ আরও সতর্ক থাকতে পারবেন। গ্রামের দিকে কিভাবে কাজকর্ম শুরু করা যায় সেটা দেখছি আমরা।’
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে তদারকিতে এদিন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের নেতৃত্বে মন্ত্রীগোষ্ঠী গড়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই গোষ্ঠীতে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা, স্বাস্থ্য সচিবও। তবে কেন্দ্রের একের পর এক নির্দেশিকা জারিতে তিনি যে যারপরনাই অখুশি, তা এদিন পরিষ্কার ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘একটা করে সার্কুলার দিয়ে দিচ্ছে, আলোচনা ছাড়াই, রাজ্যের সুবিধা অসুবিধা জিঞ্জেস করাই হচ্ছে না। একদিকে লকডাউন কঠোর করতে বলছে। অথচ সব দোকান খুলে দেওয়ার কথা বলছে। এবার আমি মানুষকে কীভাবে বলব, দোকানে যাবেন না! দোকানদারদের কীভাবে বলব দোকান খুলবেন না। এতে তো আমরাই বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছি। কেন্দ্রের কথায় আর কাজে কোনও স্বচ্ছতা নেই।’ তবে একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, “রাজ্য সরকার আপনাদের পাশেই আছে। ঘরে থাকুন সেটাই সবচেয়ে নিরাপদ। কোনও চিন্তা করবেন না বিপদ কেটে যাবে।”