আমাদের ভারত, ২৫ জানুয়ারি: অবিলম্বে করোনাবিধি মেনে রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন চালু করার জন্য আবেদন করল উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সন্দীপ ঘোষ ও সম্পাদক ভাস্কর ঘোষ।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে আবেদনে লেখা হয়েছে, সোজা কথা সোজাসুজি বললে ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা থাকে না। তাই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবিলম্বে করোনাবিধি মেনে পঠনপাঠন চালু করা উচিত। অবর্ণনীয় ক্ষতি হচ্ছে প্রান্তিক, গরিব ও মধ্যবিত্তের শিশুদের। ২০২০-র ২৩ মার্চ থেকে অতিমারীর প্রকোপে সারা দেশের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এই রাজ্যের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিও বন্ধ হয়ে যায়। সেই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী ছিল সন্দেহ নেই। কিন্তু ইতোমধ্যেই দেশের অনেকগুলি রাজ্যে বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন চালু হয়ে গেছে। এ-রাজ্যেও মেলা, খেলা, পুজো, দোকানদানি, ভোট সমস্ত চালু হয়ে গেছে। সাধারণ গণপরিবহনও চালু। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি নামেই চালু কিন্তু পঠনপাঠন বন্ধ। কেবল মাসে একবার চাল-আলু ইত্যাদি ও অ্যাক্টিভিটি টাস্ক বিতরিত হচ্ছে। এর ফলে রাজ্যের অধিকাংশ শিশু লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ছে তাই নয়, পুষ্টি ও মানসিক বিকাশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, অপুষ্টির আওতায় থাকা শিশুর সংখ্যা বেড়ে গেছে প্রায় সাড়ে তেত্রিশ শতাংশ। স্কুলছুট বাড়ছে ভয়াবহহারে। অতএব এই পরিস্থিতিতে যখন ভারতের বাইশটি রাজ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন চালু হয়ে গেছে, আমরা পশ্চিমবঙ্গের আপামর প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা, চাইছি অবিলম্বে করোনাবিধি মেনে, যথাসম্ভব সাবধানতার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পঠনপাঠন চালু হোক। পঠনপাঠন চালু করার ব্যাপারে আর কোনও শিথিলতা, যেমন বিদ্যালয়কে এড়িয়ে তথাকথিত ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ বা এই ধরণের ইউটোপিয়ান পরিকল্পনা ও প্রয়োগ সরকারি শিক্ষাক্ষেত্রে ভয়ংকরতম নৈরাজ্য ও সর্বনাশকে ডেকে আনবে বলেই আমাদের বিশ্বাস, যা আসলে ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার পরিপন্থী এবং কার্যত এই নৈরাজ্য শিক্ষাক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে বাণিজ্যিক অসাধুতাকেই অনিবার্য করে তুলবে।
আশা করি, আমাদের এই সঙ্গত দাবি আপনাদের সহৃদয় বিবেচনা পাবে এবং অবিলম্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পঠনপাঠন চালু করার মাধ্যমে আগামী নৈরাজ্যকে রুখে দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।”