চিড় বিশ্বাসেও! দলের ভাঙন নিয়ে প্রশান্ত কিশোরকে এবার সরাসরি আক্রমণ দলনেত্রীর

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৯ ডিসেম্বর: যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা লড়াই করে তৃণমূল দল তৈরি করেছিলেন, সেই কারণে প্রশাসনের দায়িত্বের পর দলীয় কাজকর্ম সব দিক দেখা সম্ভব হচ্ছিল না। সেই কারণেই দলের সমস্ত কিছু ম্যানেজ করার জন্য ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে আসা হয়। তার জন্য খরচ হয়েছে ৪০০ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু আবেগের রাজনৈতিক দলে কর্পোরেট মানসিকতার পছন্দ হয়নি অনেক নেতারই। একইসঙ্গে মুকুল রায় থেকে শুভেন্দু অধিকারীর মত অনেক দলত্যাগী নেতার অভিযোগ, তৃণমূলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরো দুই-একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী যতটা গুরত্ব পান, তারা জান-প্রাণ লাগিয়ে সাংগঠনিক কাজ করলেও সেই সম্মান পান না। সেই কারণেই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন অনেকেই। আর চলতি মাসে দলে দলে বিজেপিতে বিধায়কদের যোগদান সেই ঘটনারই ফলাফল, এমনটাই মনে করছেন অনেকে। ফলে দলের কোর কমিটির বৈঠকে এবার সরাসরি প্রশ্নের মুখে পড়তে হল প্রশান্ত কিশোরকেই।

বিদ্রোহী বিধায়কদের বাড়িতে গিয়েও তাদের বোঝাতে সমর্থ হচ্ছেন না প্রশান্ত কিশোর এবং তার আই প্যাক টিম। নেতাদের দাবি, তাদের প্রচারের রণকৌশলকে গুরুত্ব না দিয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে প্রশান্ত কিশোরের প্রযুক্তিগত প্রচার কৌশল, যা পছন্দ হচ্ছে না অনেকেরই। আর এর ফলে নিজেদের জনসমর্থন খোয়াতে গররাজি ওই সমস্ত নেতারা। শুক্রবার কালীঘাটের বাড়িতে কোর কমিটির বৈঠকে এবার সরাসরি ভোটকুশলী পিকে‌র সঙ্গেও কথাবার্তা হয় তৃণমূল সুপ্রিমোর৷ এই ঘরের ভাঙন নিয়ে সরাসরি তৃণমূল নেত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রশান্ত কিশোর৷

সূত্রের খবর, এদিন কালীঘাটের কোর কমিটির বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পিকে‌র কাছে জানতে চান এই পরিস্থিতির কারণ কী?‌ সমস্যাটা ঠিক কোথায়?‌ তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ‘কেনও এইসব হচ্ছে?‌ আপনার কী মনে হয়!’ উত্তরে প্রশান্ত কিশোর নাকি বলেছেন, ‘বিজেপি বিভিন্নভাবে এজেন্সির ভয় দেখাচ্ছে। নিজেদের বাঁচাতে অনেকে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন‌‌‌‌‌। অনেককে নানাবিধ প্রলোভন দেওয়া হচ্ছে।’ দলনেত্রী বলেন, ‘দেখুন, বাকিরা যাঁরা আছেন, তাঁদের বোঝান৷ যেটা হচ্ছে ঠিক হচ্ছে না।’ এভাবে চলতে থাকলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাকে নিতে হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here