পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৫ জানুয়ারি: দলীয় কোন্দলের জের। কর্মিসভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে লোহার রডের আঘাতে মাথা ফাটলো তৃণমূল বুথ সহ-সভাপতির। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বালুরঘাটের বোয়ালদাড় এলাকার। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বেগুনবাড়ি সংসদের তৃণমূল সহ সভাপতি পিন্টু রায়কে সোমবার রাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
যদিও এই ঘটনা নিয়ে সরাসরি গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ তুলেছেন ওই বুথ সহ সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, কর্মিসভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে উপপ্রধান পিন্টু বসাক ও শরিফুল সরকাররা লোহার রড দিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। যদিও এই ঘটনা নিয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বালুরঘাট থানায়। এদিকে এই ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পিন্টু বসাক।
জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজ ও ঠিকাদারির ভাগাভাগি নিয়ে শুরু হয় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা। যে ঘটনাকে প্রত্যক্ষ মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বালুরঘাট ব্লক তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে। ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এমন ক্ষোভ উগড়ান ওই পঞ্চায়েতের প্রধান মৌসুমী রায়। আর যার জেরে অনাস্থা ডেকে ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মৌসুমী রায়’কে সরিয়ে দিয়ে প্রধান করা হয় গীতাঞ্জলি বর্মনকে। তৃণমূল পরিচালিত ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে লাগামহীন দুর্নীতির পাশাপাশি সামনে আসে দুই গোষ্ঠীর কাজিয়াও। আর যাকে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে মাঠে নামে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবার ওই পঞ্চায়েত লাগোয়া খাসপুর হাইস্কুলে একটি কর্মিসভার ডাক দেয় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। যেখানে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান নিখিল সিংহ রায়ের উপস্থিতিতেই চলছিল একটি কর্মিসভা। আর সেই কর্মিসভাতেই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন দুর্নীতির কাজের বিষয় নিয়ে সরব হতে দেখা যায় বেগুনবাড়ি সংসদের সহ-সভাপতি পিন্টু রায় সহ বেশ কয়েকজনকে। যাকে ঘিরে সভার ভেতরেই মারমুখি হয়ে ওঠে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পিন্টু বসাক বলে অভিযোগ। চলে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও। আর যাকে ঘিরেই ওইদিন বিকেলে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় খাসপুর এলাকায়। এরপর সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথেই বেগুনবাড়ি সংসদের ওই তৃণমূলের সহ-সভাপতিকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে পিন্টু বসাক ও শরিফুল সরকার বলে অভিযোগ। যদিও স্থানীয়দের তৎপরতায় রক্তাক্ত অবস্থায় ওই দিন রাতেই বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ওই তৃণমূল বুথ সহ সভাপতিকে। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
আহত তৃণমূল বুথ সহ সভাপতি পিন্টু রায় জানিয়েছেন, কর্মিসভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে লোহার রড দিয়ে উপপ্রধান পিন্টু বসাক এবং শরিফুল সরকার তাকে মারধর করেছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।
যদিও বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পিন্টু বসাক জানিয়েছেন, এই ঘটনার সাথে দলের কোন বিষয় জড়িত নয়। মদ্যপ অবস্থায় পাশ্ববর্তী কোনো বাড়িতে ঝামেলা করতে গিয়েই তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান নিখিল সিংহ রায় এদিন টেলিফোনে জানান, কর্মিসভাতে কোন ঝামেলা হয়নি। পরে কোথায় গিয়ে দলের ওই কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন তা খোঁজ নিয়ে জেলা সভাপতির সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।