ট্রেড মিলে চলতে চলতে দিশাহীন ভাঁওতার বাজেট তৈরি করেছে তৃণমূল সরকার, তুমুল সমালোচনা সুকান্ত, শুভেন্দু সহ বিরোধীদের

আমাদের ভারত, ১৫ ফেব্রুয়ারি: রাজ্যের বাজেট নিয়ে রাজ্যকে তুলোধোনা করলো বিজেপি সহ বিরোধীরা। রাজ্যবাসীর সমস্যার সুরাহা তো দূর, এই বাজেটের কোনো দিশা নেই। যৌবনহীন, ভাঁওতার বাজেট বলে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা। বিজেপি রাজ্য সভাপতির কটাক্ষ এটা ট্রেডমিল বাজেট প্রতিবছর বার বার একই কথা বলা হয়, এবারেও তাই হয়েছে।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে বুধবার বিধানসভায় বাজেট পেশ করেছে রাজ্য। ডিএ, লক্ষ্মীর ভান্ডার, ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড সহ একাধিক ঘোষণা করেছে অর্থমন্ত্রী।সাধারণের কথা মাথায় রেখে বাজেট তৈরি করেছে বলে দাবি রাজ্য সরকারের, কিন্তু তা মানতে নারাজ বিরোধীরা।

সুকান্ত শুভেন্দু সহ বিজেপি নেতারা রাজ্য বাজেটের তুমুল সমালোচনা করেছেন। শুভেন্দু বলেছেন, ভোটের কথা মাথায় রেখে বাজেট করা হয়েছে তবে অত্যন্ত কাঁচা কাজ। অন্যদিকে সুকান্ত এই বাজেটকে দিশাহীন বলেছেন। তাঁর দাবি, এই বাজেট কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার বদলে কর্মহীনতা বাড়াবে। আরো বেশি সংখ্যক রাজ্যের মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে কাজের খোঁজে রাজ্যের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হবেন। বিজেপির দাবি, এই বাজেট যৌবনহীন বাজেট। সুকান্ত মজুমদার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ট্রেড মিলে যেমন এক জায়গায় ঘুরে ঘুরে ফিরে আসেন তেমনই কর্মসংস্থানের কথায় বার বার বানতলা বলেন, যার কোনো সত্যতা নেই। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যুবদের জন্য যে ক্রেডিট কার্ডের ঘোষণা করা হয়েছে তার টাকা কোথা থেকে আসবে? আগের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের লোন কোনো রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্ক দিতে চায় না। মমতা সরকার কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলোকে চাপ দিয়ে এই প্রকল্পে লোন দিতে বাধ্য করে, যার ফলে ওই ব্যঙ্কগুলি ও তার গ্রাহকরা আগামী দিনে অসুবিধায় পড়বে।

সুকান্তর আরও অভিযোগ, রাজ্যে সবজির দাম কমাতে সবজি রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন, তার কোনো ব্যবস্থা করার জন্য বাজেটে কোনো পদক্ষেপের উল্লেখ নেই। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, রাস্তা তৈরির জন্য যে পরিমাণ টাকা বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে তাতে রাস্তায় তাপ্পি মারা ছাড়া কোনো কাজ হবে না। একই সঙ্গে সুকান্তর অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যে দুবার পেট্রোপন্যের দাম কমিয়েছে। সেখানে এবারের বাজেটেও রাজ্যের তরফে পেট্রোপন্যের দাম কমানোর কোনো পদক্ষেপ দেখা গেল না।

এবার বাজেটে রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে তা নিয়েও তোপ দেগেছেন সুকান্ত। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের হারে ডিএ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে বিজেপি। অন্যদিকে এই বিষয়ে বামেদের দাবি, পুরোটাই ভাঁওতা। রাজ্যবাসীকে ধোকা দেওয়ার চেষ্টা।

শুভেন্দু বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে যে সমস্ত জলন্ত ইস্যু আছে, মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা আছে, তার জন্য কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি। তাঁর দাবি, বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সেতু পরিকাঠামো নিয়ে কোনো ঘোষণা নেই। শুভেন্দুর সংযোজন কিছুটা ভোট মুখে করার চেষ্টা হয়েছে বাজেটে, কিন্তু কাঁচা কাজ হয়েছে। তাঁর কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রী ট্রেড মিলে চলতে চলতে ৩০ মিনিটে বাজেট তৈরি করেছেন।

এদিকে কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “এত কালো টাকা উদ্ধার হচ্ছে বাজেটে কেন তা নিয়ে কিছু বললেন না অর্থমন্ত্রী? শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচানোর জন্য শিক্ষালয়গুলিকে কীভাবে শিক্ষক নিয়োগ হবে তা নিয়ে একটি শব্দ খরচ করেনি। প্রশ্ন কোথা থেকে এত কোটি টাকা আসবে তাও পরিস্কার করেনি। আসলে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেমন অর্থনীতিবিদ তেমনি অর্থনীতিবিদ আমাদের অর্থমন্ত্রী।”

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, পুরোটাই ভাঁওতা। রাজ্যবাসীকে ধোকা দেওয়ার চেষ্টা। ৩% ডিএ এমনি বাড়ত, এটা কোনো নতুন তথ্য নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *