ডিভোর্সের মামলার জের! স্ত্রীকে খুন করে এসে শাশুড়িকে গুলি করে খুন করে আত্মঘাতী যুবক

(ছবিঃ অমিত ও শিল্পী আগরওয়াল) রাজেন রায়, কলকাতা, ২২ জুন: বেঙ্গালুরু এবং কলকাতায় একসঙ্গে পরপর দুটি খুন এবং একটি আত্মহত্যা! সোমবার সন্ধ্যায় শিউরে ওঠার মতো ঘটনা ঘটল কলকাতার ফুলবাগান থানা এলাকায়। ডিভোর্স মামলা নিয়ে বচসার জেরে শাশুড়িকে গুলি করে নিজেও আত্মঘাতী হল এক যুবক। শুধু তাই নয়, ঘটনা তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারল, সোমবার সকালে স্ত্রী শিল্পী আগরওয়ালকেও ওই একই বন্দুকে খুন করে আজ দুপুরেই কলকাতা বিমানবন্দরে নামে অমিত। নেমে সোজা চলে যায় ফুলবাগানের কাঁকুড়গাছি শ্বশুর শাশুড়ির ফ্ল্যাটে। ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাটে শিল্পীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ।

এদিকে ফুলবাগান থানা এলাকার কাঁকুরগাছির একটি আবাসনে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ পরপর তিন বার গুলির আওয়াজ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। এরপরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। শ্বশুরের দিকে গুলি চালালেও লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ফুলবাগানের রামকৃষ্ণ সমাধি রোডের একটি আবাসনে থাকতেন বছর সত্তরের সুভাষ ধান্ধানিয়া এবং তাঁর স্ত্রী ললিতা। তাঁদের মেয়ে শিল্পীর সঙ্গে অমিত আগরওয়াল নামে ওই যুবকের বিয়ে দিয়েছিলেন। মেয়ে জামাই দুজনে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। কিন্তু মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে তেমন বনিবনা না হওয়ায় ২ বছর আগে বিচ্ছেদের মামলা শুরু হয়। আজ বিকেল সাড়ে ৬টা নাগাদ আচমকাই ধান্ধানিয়াদের ফ্ল্যাটে হাজির হয় অমিত। শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ডিভোর্সের মামলার কথা বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে পড়ে সে।

শ্বশুর সুভাষ ধান্ধানিয়ার দাবি, অমিত যে তাঁর মেয়েকে খুন করেছে তা তিনি জানতেন না। উল্টে এই ডিভোর্সের মামলা এতদিন ধরে চলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়ে সে। জামাইকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। উলটে জামার পিছন থেকে আচমকাই বন্দুক বের করে ললিতাদেবীকে খুব কাছ থেকে গুলি করে অমিত। তারপর তার দিকে গুলি চালায়। অমিতের শ্বশুর সুভাষ ধান্ধানিয়া ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পাশের ফ্ল্যাটে পালানোর চেষ্টা করেন। সেই সময়ই নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে অমিত আত্মঘাতী হয়।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, সুভাষ ধান্ধানিয়ার ফ্ল্যাটে একদিকে পড়ে রয়েছে ললিতাদেবী এবং অন্যদিকে অমিতের মৃতদেহ। পাশে পড়ে রয়েছে তার আগ্নেয়াস্ত্র। মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় প্রতিবেশীদের বয়ানও নেওয়া হবে। আবাসনের ওই ফ্ল্যাট সিল করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে এসে পরীক্ষা করে দেখবে ফরেনসিক দল। এদিকে বেঙ্গালুরুর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কি পেয়েছে তা জানতে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে তাঁদের সঙ্গেও। সুভাষ ধান্ধানিয়া এবং এই পরিবারের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটি পরিষ্কার ভাবে জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *