আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ২৮ জুন: বীমার টাকা হাতানোর জন্য নিজেরই মোবাইল ফোনের দোকানে চুরি হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার অন্তর্গত জীবনতলা বাজারের ব্যবসায়ী নূর মহম্মদ মোল্লা। গত ২৫ জুন জীবনতলা থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এই বিষয়ে। নগদ দশ লক্ষ টাকা ও বেশ কিছু দামি মোবাইল ফোন চুরি গিয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নামে জীবনতলা থানার পুলিশ ও বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের সদস্যরা। তদন্তে নেমে রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ। দোকান মালিক নূর মহম্মদ নিজেই নিজের দোকানে চুরির মিথ্যা ফাঁদ পেতেছিল। পুলিশি জেরায় সে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে।
গত ২৪ জুন রাতে জীবনতলা থানার সামনেই আলি মোবাইল সেন্টার থেকে নগদ দশ লক্ষ টাকা ও বেশ কিছু দামি মোবাইল চুরির হয় বলে জীবনতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন খোদ দোকানের মালিক নূর মহম্মদ। অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করে জীবনতলা থানার পুলিশ। সাথে বারুইপুর জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের সদস্যরাও তদন্তে নামে। তদন্তে নেমে জীবনতলা থানার পুলিশ দোকান মালিক নূর মোহম্মদ মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। পুলিশি জেরায় পরে তিনি স্বীকার করেন যে এই টাকা ও মোবাইল চুরির নাটক সাজিয়েছিলেন ইন্সুরেন্স কোম্পানি থেকে টাকা হাতানোর জন্য। পুলিশের জেরায় তিনি আরও জানান তার দোকানের ভিতরেই তিনি লুকিয়ে রেখেছেন খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা। সেই মোতাবেক জীবনতলা থানার পুলিশ ঐ দোকানে তল্লাশি চালিয়ে মোট এগারোটি মোবাইল ফোন ও নগদ সত্তর হাজার টাকা উদ্ধার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ব্যবসা করতে গিয়ে এলাকায় প্রায় চল্লিশ লক্ষ টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিলেন ঐ ব্যবসায়ী। পাওনাদারদের চাপে বাইরে চলাফেরা দায় হয়ে উঠেছিল তার। আর সেই কারণেই তিনি নিজের দোকানে চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে বিমা কোম্পানির টাকা হাতানোর চেষ্টা করেছিলেন। ঘটনার দুদিনের মধ্যেই রহস্য উদ্ঘাটন হওয়ায় খুশি জীবনতলা থানার পুলিশ কর্মীরা।
ক্যানিংয়ের এসডিপিও দেবী দয়াল কুণ্ডু রবিবার সকালে এ বিষয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন নিজের অফিসে। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “ বীমা কোম্পানির টাকা হাতানোর জন্যই এই ছক কষেছিল খোদ দোকানের মালিক। তবে পুলিশ দুদিনের মধ্যেই রহস্যের উদ্ঘাটন করেছে”।