জয় লাহা, দুর্গাপুর, ৩ জুন: বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই, পঞ্চায়েতের নির্দেশে কাটা হল গাছ। আর তাতেই বিস্তর বিতর্কের দানা বেঁধেছে। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে, কাঁকসার বনকাটি এলাকায়। নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়েছে বলে সাফাই পঞ্চায়েতের।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন বনকাটি পঞ্চায়েত একটি নির্দেশনামা জারি করে। তাতে শ্যামবাজার কলোনী চম্পাইনগর এলাকায় রাস্তার পাশে প্রায় ৪০টি গাছ কাটার জন্য মাধব ঘোষকে বলা হয়। গাছগুলি পঞ্চায়েতের পক্ষে লালচাঁদ বাগদি নামে একজনকে দেখাশোনার জন্য দেওয়া ছিল। যার মধ্যে ১৪ টি মহা নিম গাছ, ২৪ টি সেনাঝুরি, ২ টি করঞ্চা গাছ। গাছগুলি নিলামে ২৫ হাজার টাকা দর ওঠে। সেই মত মাধব ঘোষ গাছ কাটা শুরু করে। শুক্রবার গাছ কাটা শুরু হতেই বিতর্ক শুরু হয়। সাধারণ মানুষের নজরে পড়তেই খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করে। জানাগেছে, বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই গাছগুলি কাটা হচ্ছিল। আর প্রশ্ন এখানেই, ২০০৬ সালের বন সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী গাছ কাটতে হলে, অবশ্যই বন বিভাগের অনুমতি প্রয়োজন। তাতে সরকারি কিম্বা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি যাই হোক, বন বিভাগের অনুমতি আবশ্যক। এছাড়াও একটি গাছ কাটার জন্য কমপক্ষে ৩ টি গাছ লাগাতে হবে। সম্প্রতিকালে গরমের দাবদহে সাধারণ মানুষ নাজেহাল। পরিবেশ দূষন ঠেকাতে বৃক্ষ রোপনের জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সবুজ ধ্বংস রোধে আইনকে কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে।
বনকাটি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জামল আরা বেগম জানান, “নির্দেশিকার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমার সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা করেনি।” প্রশ্ন, বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই কেন কাটা হল গাছ? বন বিভাগকে উপেক্ষা করে কিভাবে পঞ্চায়েত গাছ কাটার নির্দেশ দিলেন? শেষ পর্যন্ত খবর যায় স্থানীয় বনকাটি বিট অফিসারের কাছে। খবর পেয়ে বনকাটি বিট অফিসার ৯ টি কাটা গাছ বাজেয়াপ্ত করে।
নিলামের নির্দেশ পাওয়া মাধব ঘোষ বলেন, “পঞ্চায়েত অনুমতি দিয়েছে। তাই গাছ কাটা হয়েছে।”
বনকাটি পঞ্চায়েত প্রধান পিন্টু বাগদি জানান, “নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়েছে।”
বর্ধমান আঞ্চলিক বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী জানান, “বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যায় না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।”