নেতাজিকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল স্বাধীনতার পর, কর্তব্যপথ ও মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে বললেন মোদী

আমাদের ভারত, ৮ সেপ্টেম্বর: গ্রানাইট পাথর কেটে তৈরি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি উন্মোচিত হল আজ। এই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই নাম না করে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে নেতাজিকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের শাসন দীর্ঘকাল ছিল কংগ্রেসের হাতে। তাই মোদী যে কংগ্রেসকেই ইঙ্গিত করেছেন সেটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারোর। একেবারে আক্রমণের সুরেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর নেতাজিকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে আমাদের সরকারের সিদ্ধান্তে নেতাজীর ভাবনা প্রকাশিত হয়েছে।

রাজপথের নাম বদলে কর্তব্য পথ করার পর নেতাজির মূর্তি উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী বলেন, নেতাজি মহামানব ছিলেন। গোটা বিশ্ব তাকে নেতা হিসেবে মেনেছিলেন। নেতাজির মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। ভারতের গৌরবময় ইতিহাস ভারতীয়দের রক্তেই বোনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “নেতাজি ভারতকে দ্রুত আধুনিক তৈরি করার প্রচেষ্টা করেছিলেন। নেতাজির পথে চললে দেশ আজ অনেকটাই এগিয়ে যেতো। নেতাজির ১২৫ বছর জন্মজয়ন্তীতে তার কলকাতার বাড়িতে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার।”

মোদী বলেন, “দেশের পথপ্রদর্শক ছিলেন নেতাজি।১৯৪৭ সালে আন্দামানকে স্বাধীন করেছিলেন তিনি। আমাদের সরকারের প্রচেষ্টায় নেতাজি ও আজাদ হিন্দ ফৌজকে নিয়ে মিউজিয়াম তৈরি হয়েছে। আর আজ জর্জ পঞ্চম এর বদলে নেতাজির মূর্তি স্থাপন হল।

প্রসঙ্গত, ৬৫ মেট্রিক টনের ২৮ ফুটের নেতাজির মূর্তি উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। ২৮০ মেট্রিক টন গ্রানাইট কেটে তৈরি হয়েছে এই ৬৪ মেট্রিক টনের নেতাজির মূর্তি। তেলেঙ্গানার খাম্মাম থেকে ১৪৪টি চাকার ১০০ ফুটের বিশেষ গাড়িতে দিল্লি নিয়ে আসা হয়েছে মূর্তিটি।

অন্যদিকে ইন্ডিয়া গেট থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে কর্তব্যপথ। অনুষ্ঠানের শেষে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন সপ্তাহে শুক্র শনি রবিবার সন্ধ্যায় নেতাজীকে নিয়ে ড্রোন শো হবে কর্তব্য পথে। তিনি বলেন, “আপনারা আসুন, দেখুন, আত্মনির্ভর ভারতের অংশ হয়ে উঠুন। আর পরিবারের সঙ্গে নিজেদের ছবি সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে ভুলবেন না। হ্যাশ ট্যাগ থাকুক কর্তব্যপথ।

রাজপথের নাম কর্তব্য পথ করার কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কর্তব্যপথে যখন দেশের লোক আসবে তখন নেতাজির মূর্তি তাদের প্রেরনা দেবে। রাজপথ ছিল দেশের পরাধীনতার প্রতীক। রাজপথ ব্রিটিশদের জন্য ছিল। ভারতের পরাধীনতার প্রতীক রাজপথে আর্কিটেকচার বদলেছে। আত্মাও বদলেছে। কর্তব্য পথ দিয়ে হাঁটলে মনে হবে আমাদের কাছে দেশ সবার আগে। ভবিষ্যতের কর্তব্যের রাস্তা দেখাবে এই কর্তব্যপথ।” কর্তব্য পথ তৈরি করেছেন যে শ্রমিকরা আগামী ২৬ জানুয়ারি তারাই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বলে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *