এবার পরিযায়ী পাখির সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে কুলিক পক্ষীনিবাসে

স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ৮ জুন: লকডাউনের জেরে পরিবেশ দূষণ কমে যাওয়া এবং বনদপ্তরের উন্নত পরিকাঠামোর কারণে গতবারের তুলনায় এবারেও পরিযায়ী পাখির সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে বলে আশা রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাস কর্তৃপক্ষের। রায়গঞ্জ অতিরিক্ত বিভাগীয় বন আধিকারিক জানিয়েছেন, কুলিক পক্ষীনিবাসে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। সরকার থেকে পরিযায়ী পাখিদের এই কুলিক পক্ষীনিবাসে থাকার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করার ফলেই দিন দিন পাখির সংখ্যা বাড়ছে।

এশিয়ার বৃহত্তম পক্ষীনিবাস বলে পরিচিত উত্তর দিনাজপুর জেলা সদর রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন কুলিক পক্ষীনিবাস। রায়গঞ্জ শহরের কুলিক নদীর ধারে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ৬০০ একর বনাঞ্চল এলাকা নিয়ে গঠিত এই পক্ষীনিবাসে প্রতি বছর মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত হাজার হাজার মাইল দূরের শীতপ্রধান দেশ থেকে ছুটে আসে পরিযায়ী পাখিরা। ওপেন বিল স্টক, ইগ্রেট, করমোরেন্ট, নাইট হেরন মূলত এই চার প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এখানে এসে সঙ্গী নির্বাচন করে বাসা বাঁধে। ডিম ফুটিয়ে শাবকের জন্ম দেয়। শাবকদের উড়তে শেখানো, তাদের বড় করে তোলা পর্যন্ত থাকে। শীত আসার আগেই এরা আবার ফিরে যায় যেখান থেকে তারা আসে।

এই সময় পরিযায়ী পাখিদের কলতানে মুখরিত হয়ে থাকে কুলিক পক্ষীনিবাস। তাদের কলাকৌশল ও কলতানে আকৃষ্ট হয়ে বহু পর্যটকের সমাগম হয় এখানে। ২০২০ সাল থেকে করোনার কারনে লকডাউন থাকায় পরিবেশ দূষণ অনেকটাই কম হওয়ায় এবং রাজ্য বন দপ্তর পক্ষীনিবাসে উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলায় পাখির সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।

বন দপ্তরের রায়গঞ্জ অতিরিক্ত বিভাগীয় বন আধিকারিক জানিয়েছেন, গতবছর এই পক্ষীনিবাসে ৯৮৬০০ পাখি এসেছিল। এবছর তাঁদের আশা কুলিক পক্ষীনিবাসে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা একলক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। তবে গতবছর থেকে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় পর্যটকদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে কুলিক পক্ষীনিবাস। ফলে পর্যটক না আসায় বন বিভাগের আয়ও কমে গিয়েছে বলে জানালেন অতিরিক্ত বিভাগীয় বন আধিকারিক সিতান্তু গুপ্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *