এবার খড়দহে জল যন্ত্রণার বলি হলেন একই পরিবারের তিন জন

আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ২১ সেপ্টেম্বর:
পাতুলিয়ার সরকারি আবাসনে একই পরিবারের তিন জনের বিদ্যুৎ স্পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু‌র ঘটনায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল খরদহতে। পাতুলিয়ার এই আবাসনটি পুলিশ কোয়ার্টার নামে পরিচিত। প্রতিবার বর্ষাতে এই অঞ্চলে জল জমে এবং সেই জল মানুষের ঘরে ঢুকে যায়। রবিবার রাত থেকে চলা একটানা বৃষ্টিতে জল জমে যায় এই আবাসনে। মঙ্গলবার বৃষ্টি থামলেও এই আবাসনের জল নামেনি।

এই আবাসনের বাসিন্দা ছিলেন রাজা দাস (৩৫), পৌলমী দাস। তারা তাদের দুই পুত্র নিয়ে থাকতেন। মঙ্গলবার বিকেলে পৌলমী দাস ঘরের ভেতরে জমা জলে দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন আর সেই সময় তার স্বামী ফ্রিজের পাশে দাঁড়িয়ে বিদ্যুতের কাজ করছিলেন। জলে দাঁড়িয়ে বিদ্যুতের কাজ করার সময় হঠাৎ করেই ঘরের ভেতরে জমা জলে পড়ে যান। তখন তাকে পড়ে থাকতে দেখে ছুটে এসে বাঁচাতে যান তার স্ত্রী পৌলমী দেবী। তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের পড়ে থাকতে দেখে তাদের বড় ছেলে ১১ বছরের নীল দাস মা বাবাকে বাঁচাতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। এই অবস্থায় তাদের ছোট ছেলে বিষয়টি দেখে আশপাশের লোকদের ডাকাডাকি করে। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং সঙ্গে সঙ্গে মেন লাইন বন্ধ করে দেন সেই সঙ্গে রহরা থানায় খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে রহড়া থানার পুলিশ ও বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা। তারা ওই তিন জনকে দ্রুত ব্যারাকপুর
বিএন বোস হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই ওই তিন জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় একই পরিবারের এক শিশু সহ তিন জনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পাতুলিয়া সরকারি আবাসনে।

এদিন এই ঘটনার পর ওই আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারা বলেন, “আমাদের আবাসনে জল জমে আছে। ঘরের ভেতরে পর্যন্ত জল জমে আছে। আজ আমাদের আবাসনের এক পরিবারের তিন জন মারা গেছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে।এই আবাসনের জল নামানোর জন্য পাম্প চলছিল কিন্তু জল এখনও নামেনি।

রাজা দাস ফ্রিজের পাশে কিছু কাজ করছিল সেই সময় প্লাগে হাত দিতেই মাটিতে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার স্ত্রী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। আর ওদের জলে পড়ে থাকতে দেখে ওদের বড় ছেলে ওদের বাঁচাতে যায়। সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানায়। আমাদের এখানে সারাবছর জল জমে যায় একটু বৃষ্টি তেই।”

এই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রহরা থানার পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *