রাজেন রায়, কলকাতা, ১৪ ডিসেম্বর: ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকে শেষের দিকে রাজনৈতিক বাঁধন আলগা হচ্ছিল বামফ্রন্ট সরকারের। আর সেই ছিদ্রকে হাতিয়ার করেই রাজনৈতিক উত্থান হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু মাত্র দশ বছরে যেমন রাজ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দল পাল্টে গিয়েছে তেমনই আলগা হচ্ছে রাজনৈতিক রাশ। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শীলভদ্র দত্তের পর জিতেন্দ্র তিওয়ারি! এবার তার ক্ষোভ সামাল দিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যে ৬টায় তাকে কলকাতায় ডেকে পাঠাল দল।
সোমবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে এক চিঠির মাধ্যমে কেন্দ্রে এতদিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছিল, সেই বিষয়টিও উস্কে দেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই কেন্দ্রের পাঠানো টাকা উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।পুরমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, “কেন্দ্রের স্মার্ট সিটি প্রকল্পের ২০০০ কোটি টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে আসানসোল। রাজনৈতিক কারণে পুরদফতর এই টাকা নিতে দেয়নি। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে কেবল রাজনৈতিক কারণে।”একই কারণে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের টাকা থেকেও বঞ্চিত হয়েছে আসানসোল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
চাঞ্চল্যকর এই চিঠিটি সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই ফের অস্বস্তির বাতাবরণ ছড়িয়ে পড়ে তৃণমূল শিবিরে। কিভাবে দলের অন্দরের একের পর এক চিঠি প্রকাশ্যে চলে আসছে, তা নিয়ে এমনিতেই চিন্তায় তৃণমূল। ফিরহাদকে ব্যক্তিগতভাবে পাঠানো জিতেন্দ্রর চিঠি কিভাবে সংবাদমাধ্যমের হাতে পৌঁছল, তা নিয়ে চিন্তায় তৃণমূল শিবির। যদিও এর প্রেক্ষিতে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আসানসোলের উন্নয়নের জন্য ওঁকে অনেক টাকাই দেওয়া হয়েছে। সেসব তো চিঠিতে লেখেনি। ও নিশ্চয়ই গ্যাস খেয়ে লিখেছে। জিতেন যে টাকার কথা বলছে সেগুলো ভুয়ো। স্মার্ট সিটিতে ১০০ কোটি টাকার ৫০ শতাংশ রাজ্য সরকার দেয়। সব সময় কেন্দ্রীয় সরকার পুরো টাকা দেয় না। স্মার্ট সিটি প্রকল্পতে আমরা উৎসাহ দেখাই না। কেন্দ্রীয় সরকার যদি ৫০০ কোটি দেয় তাহলে আমাদেরও ৫০০ কোটি করে দিতে হবে। আমাদের অত বাজেট থাকে না।”