বালুরঘাটে করোনার চাল আলু বিলি নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে, লকডাউন ভেঙে বিক্ষোভ হাজার মানুষের

আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ২৯ মার্চ: করোনার বিরুদ্ধে লড়তে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে চাল আলু বিলি করা নিয়েও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। লকডাউন ভেঙে বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নামলেন প্রায় হাজার বাসিন্দা। রবিবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর এলাকার এমন ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। নেতৃত্বদের ঘেরাও করে মারমুখীও হয়ে উঠেন উত্তেজিত বাসিন্দারা। ঘটনার খবর পেয়ে দফায় দফায় এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে বালুরঘাট থানার পুলিশ।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ জানিয়েছেন, চাল আলু বিলির কোনও সঠিক পরিমাপ নেই। প্যাকেট যে ভাবে আসছে সেই অনুসারেই বিলি করা হচ্ছে।

লকডাউনের ২১ দিন সাধারণ মানুষ যাতে কোনও অসুবিধায় না পড়ে সেই লক্ষ্যেই শুক্রবার থেকে বালুরঘাট শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চাল আলু বিলির সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। বিলির প্রথমদিন রাতেই শহরের ছিন্নমস্তাকলোনী এলাকায় চাল আলু বিলি নিয়ে শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে তুমুল ক্ষোভ উগড়ে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। রবিবার সকালে রবীন্দ্রনগর এলাকায় ফের চাল আলু বিলি নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সরব হন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলের বিলি করা স্লিপ দেখিয়ে মুখ চিনে চিনে কাউকে ১ কেজি, কাউকে ২ কেজি আবার কাউকে ৩ কেজি চাল দিচ্ছিলেন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতৃত্বরা। কাউকে কম আবার কাউকে বেশী চাল বিলির এমন ঘটনার পরেই উত্তেজিত হয়ে নেতৃত্বদের ঘেরাও করে মারমুখী হয়ে ওঠেন বেশকিছু বাসিন্দা। লকডাউন ভেঙে নেতাদের বেছে বেছে এমন চাল আলু বিলির প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নামেন প্রায় হাজার খানেক পুরুষ মহিলা। যদিও পরে ঘটনার খবর পেয়ে কয়েক দফায় পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

এলাকার বাসিন্দা মিঠুদাস হাজরা, রিঙ্কি দাস ও মমতা দাসরা জানিয়েছেন, আশপাশের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রত্যেককে পাঁচ কেজি করে চাল এবং ২ কেজি করে আলু বিলি করা হচ্ছে। কিন্তু এই ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতারা স্লিপ দেখে মুখ চিনে চিনে কাউকে দুকেজি আবার কাউকে তিন কেজি করে চাল দিচ্ছে। প্রত্যেককেই সমপরিমাণ চাল আলু দিতে হবে আর তা না হলে এসব দেওয়া বন্ধ করতে হবে। যার প্রতিবাদেই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বাসিন্দারা।

লকডাউন কার্যকর করতে হাজারো প্রচার, হাজারো উদ্যোগ প্রশাসনের তরফে নেওয়া হলেও তা যে কার্যত খাতায় কলমেই রয়ে গেছে এদিনের একসাথে প্রায় হাজার মানুষের সমাগমেই তা যেন স্পষ্ট হয়েছে। জনসচেতনতা বা মৃত্যু ভয় কোনও কিছুই ছুঁয়ে যেতে পারেনি বালুরঘাট শহরের সাধারণ মানুষ বা রাজনৈতিক নেতাদের কাউকেই। চাল আলু বিলি নিয়ে শহরে বারবার একই ঘটনা সামনে আসতেই যেন স্পষ্ট হচ্ছে প্রশাসনিক অকর্মন্যতার চিত্র। প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর বারবার করজোড়ে আবেদনের পরেও করোনা আতঙ্ক নিয়ে কেন ঘুম ভাঙছে না এই শহরের রাজনৈতিক নেতাদের বা প্রশসনের কর্তাদের তা নিয়ে উঠেছে জোড়ালো প্রশ্ন।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here