রবিবার ইউরোপিয়ান ক্লাবের স্মৃতি উস্কে দেবেন তিন বঙ্গললনা

অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, কলকাতা, ১৮ মার্চ: মৃদুলা মজুমদার আর পান্না বিশ্বাস। রবিবার দুই বঙ্গললনা আসছেন দক্ষিণ কলকাতার সূর্য সেন ভবনে। আসছেন আর এক বঙ্গললনা প্রয়াত প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের স্মরণে তৈরি বাংলাদেশে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ছবির প্রদর্শন উপলক্ষে। দুই কন্যা মৃদুলা আর পান্না শ্রদ্ধা জানাবেন প্রীতিলতা এবং চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাবে অন্য আক্রমণকারীদের। যাঁরা সকলেই ছিলেন সূর্য সেনের অনুগামী।

১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। একদল বিপ্লবী পাহাড়তলীর ওই ক্লাবে সশস্ত্র আক্রমণ করলেন। নেতৃত্বে ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। সংঘর্ষে অনেক হতাহত হয়। বিপ্লবীরা ক্লাবে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রীতিলতা গ্রেফতার এড়াতে সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার প্রায় নয় দশক বাদে প্রীতিলতাকে নিয়ে ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ নামে ছবি তৈরি করেছেন বাংলাদেশের পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রদীপ ঘোষ।

বিপ্লবতীর্থ চট্টগ্রাম স্মৃতি সংস্থায় রবিবার দেখানো হবে ওই ছবি। সেলিনা হোসেনের লেখা ভালবাসা প্রীতিলতাকে সেলুলয়েডে বন্দী করেছেন নবীন পরিচালক প্রদীপ। তা, কেন এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছেন মৃদুলা আর পান্না? খবরের আড়ালে এটাই আকর্ষণ— মৃদুলার বাবা ছিলেন কালীকিঙ্কর দে। ইউরোপিয়ান ক্লাব ছাড়াও জালালবাদ পাহাড় এবং চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার অভিযানে যুক্ত ছিলেন। আর পান্না হলেন ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণের সৈনিক সুশীল দে-র কন্যা।

কেবলই কি মৃদুলা আর পান্না? আগুনঝড়া দিনগুলোয় সূর্য সেনের সঙ্গে ধরা পড়েছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামী ব্রজেন সেন। রবিবার থাকছেন তাঁর পুত্র বিপ্লব সেন। সূর্য সেনকে ধরিয়ে দিয়েছিলেন যিনি, সেই নেত্র সেনকে হত্যা করেছিলেন কিরণ সেন। আসবেন প্রয়াত কিরণবাবুর পুত্র বিশ্বজিৎ সেন। চট্টগ্রামের বীর বিপ্লবী বিধুভূষণ সেনের পুত্র আশিস সেন। আরও তিন অকুতোভয় বিপ্লবী অর্ধেন্দু গুহ, যোগেশ চৌধুরী ও আশুরঞ্জন দে-র পুত্র যথাক্রমে তপন গুহ, সুব্রত চৌধুরী ও মৃদুল দে।

বিপ্লবতীর্থ চট্টগ্রাম স্মৃতি সংস্থায় ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ ছবি প্রদর্শনীর সঙ্গে থাকবে স্মৃতিচারণ, নানা আলোচনা। আসছেন বাংলাদেশের সম্ভ্রান্ত কিছু প্রতিনিধি ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এক প্রতিনিধিদল। এবং একঝাঁক নক্ষত্র। বিপ্লবীদের উত্তরপুরুষ এই নক্ষত্রদের নাম আমজনতা জানে না। এঁদের পূর্বপুরুষদের নামও আজ স্মৃতির ধারাপাতে আবছা হয়ে এসেছে। কিন্তু চট্টগ্রামে ব্রিটিশরাজের ঘুম উড়িয়ে অন্য অধ্যায় সৃষ্টি করেছিলেন সেদিনের সেই বীর বিপ্লবীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *