রাজেন রায়, কলকাতা,২৮ ডিসেম্বর: বিধানসভা ভোটের আগে সকলের জন্য স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পকে অন্যতম তুরুপের তাস করতে চাইছে শাসক দল তথা রাজ্য প্রশাসন। রাজ্যের ১০ কোটি মানুষের প্রত্যেকে যাতে সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পের সুবিধা পান, তা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্প নিয়ে যাতে পরবর্তী সময়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর তরফে কোনও সমস্যা তৈরি না হয়, তার জন্য সোমবার স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে তিনটি দাবি জানাল বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন।
স্বাস্থ্য ভবনের ‘ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ারে’র প্রেক্ষাগৃহে এদিন দুপুরে প্রথমে নার্সিংহোম এবং পরে বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা ব্যক্তিরা। সেখানে এই তিনটি দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হল প্রথমত, বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দিতে গেলে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিভিন্ন চিকিৎসার যে খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা বাড়ানোর কথা বলেন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। কী পদ্ধতিতে পরিষেবা দেওয়া হবে, তার একটি রূপরেখা তৈরির পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় বছরে কতজনকে পরিষেবা দেওয়া হবে, তাও নির্দিষ্ট করার কথা বলছেন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের একাংশ। সর্বোপরি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে পরিষেবা দেওয়ার পরে খুব বেশিদিন যাতে টাকা আটকে না রাখা হয়, সেই দাবিও রয়েছে।
বিষয় গুলি নিয়ে খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের সচিব সঞ্জয় বনশল এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।
বেসরকারি হাসপাতালগুলির বক্তব্য, রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া দরে এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দিতে গেলে অনিবার্য আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। প্রোগ্রেসিভ নার্সিংহোম অ্যান্ড হসপিটালস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ আলহাজউদ্দিন বলেন, “স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা বলছেন, কোনও রোগীকে যাতে ফেরানো না হয়। সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচের যে দর রয়েছে তা বাড়ানোর জন্য আমরা দাবি করেছিলাম। স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা চিন্তা ভাবনা করে আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন।” এখন তাদের দাবির মত স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে রাজ্য সরকারের খরচ বাড়ায় কিনা, সেটাই দেখার।