মন্দিরে আবির দেওয়াকে কেন্দ্র করে মল্লারপুরে তৃণমূল ও গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ, জখম এক

আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২ জানুয়ারি: তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে ফেরার পথে মন্দিরে আবির দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল মল্লারপুর থানার ঘোষ গ্রামে। প্রতিবাদ করায় তৃণমূল লোকজন নিয়ে এসে গ্রামবাসীদের মারধর করে বলে অভিযোগ। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার ছিল তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ওইদিন পার্শ্ববর্তী তারাপীঠ থানার খামেড্ডা গ্রামের তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা সন্ধ্যায় ঘোষগ্রামের ভিতর দিয়ে আবির ছড়াতে ছড়াতে যাচ্ছিল। আবির মন্দিরে দেওয়ায় গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করেন। এরপরেই ফিরে গিয়ে খামেড্ডা গ্রামের লোকজন রাতে ফের ঘোষগ্রামে ঢুকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তারা প্রথমেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের কার্জকর্তা সম্রাট চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দেয়। তাকে না পেয়ে তার মা বৃদ্ধা মমতা চক্রবর্তীকে তারা টানতে টানতে বাড়ির বাইরে বের করে হেনস্থা করে।

মমতাদেবী বলেন, “হঠাৎ রাতে ২০-৩০ জন যুবক বাড়িতে ঢুকে ছেলে ও স্বামীর খোঁজ শুরু করে। ছেলে পিকনিকে গিয়েছিল। স্বামী গিয়েছিল পুজো করতে। কাউকে না পেয়ে আমাকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে গিয়ে ওরা খুনের হুমকি দেয়”। মমতাদেবীকে হেনস্থা করতে দেখে এগিয়ে এসে গ্রামবাসীরা ফের প্রতিবাদ করতে গেলে তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা অপূর্ব চক্রবর্তী এবং রবি দত্তকে মারধর করে। ইটের ঘায়ে রবির মাথা ফেটে যায়। তিনি বলেন, “সবাই উন্মত্ত হয়ে গ্রামের ভিতর দিয়ে যাচ্ছিল। যাওয়ার সময় আবির ছুঁড়তে ছুঁড়তে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে দিতে যাচ্ছিল। মন্দিরে আবির দেওয়ায় গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করে। সে সময় তারা খামেড্ডা গ্রামে ফিরে যায়। রাতের দিকে ৩০-৪০ জন লোক নিয়ে গ্রামে ঢুকে প্রথমে গালিগালাজ শুরু করে। এরপর সম্রাটের বাড়িতে গিয়ে তার মা’কে টানতে টানতে রাস্তায় নিয়ে আসে। সে সময় আমরা প্রতিবাদ করি। বলি বয়স্ক মহিলাকে এভাবে তোমরা কেন টানাটানি করছ। এই কথা বলাতেই ওরা আমার মাথায় ইট দিয়ে ঠুকে দেয়। মাথা থেকে রক্ত বের হতে শুরু করলে আমার চিৎকারে আরও লোক জরো হতে শুরু করলে ওরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার আগে অপূর্ব চক্রবর্তীকেও মারধর করে”।

খবর পেয়ে গ্রামে যান বিজেপির জেলা সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এই গ্রাম বিজেপি প্রভাবিত। ফলে বার বার তৃণমূল গ্রামে আক্রমণ করে। পুলিশ অভিযোগ নেওয়া তো দূরের কথা রাতে মমতা চক্রবর্তীকে তারাপীঠ থানায় নিয়ে গিয়ে রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিযোগ না করার জন্য চাপ দেন। এমনকি পুলিশ অভিযুক্তদের সুরে কথা বলেন। এদিন ঘোষগ্রামের বড় মেলা থাকায় কিছু করছি না। তবে শুক্রবার অভিযোগ দায়ের করা হবে। তারপর পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমরা আইনের পথে হাঁটব”।

তৃণমূলের বুধিগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি আবু সেলিম বলেন, “বুধবার দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠান ছিল। তখন গ্রামের ভিতর দিয়ে আসার সময় কথা কাটাকাটি হয়েছে। বড় কিছু নয়”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *