আমাদের ভারত, হাওড়া, ৫ জুলাই: রাজনৈতিক বিবাদকে কেন্দ্র করে তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাগনানের হ্যালান গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচানি বাগপাড়া। রবিবার বিকেলের এই ঘটনায় বাড়ি ভাঙ্গচুর লুটপাট ও বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনায় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে, তাদের স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বাগনান থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
জানাগেছে, গত কয়েকদিন ধরে রাজনৈতিক বিবাদে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল বাগপাড়া। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার এলাকায় একটি সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেই উপলক্ষ্যে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা এলাকায় দলীয় পতাকা লাগাচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা তাদের বাধা দিলে এলাকায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর পরেই দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। অভিযোগ, হাতাহাতি চলাকালীন তৃণমূল আশ্রিত বহিরাগত দুষ্কৃতীরা গ্রামে ঢুকে ব্যাপক ভাঙ্গচুর চালায় ও বোমাবাজি করে। পাল্টা বিজেপি কর্মীরাও তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পরে বাগনান থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনা সম্পর্কে বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা প্রাক্তন সভাপতি অনুপম মল্লিক অভিযোগ করেন, রবিবার বিকেলে দলীয় পতাকা লাগানোর সময় তৃণমূল কর্মীরা সেইসব পতাকা খুলে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমাদের কর্মীরা বাধা দিতে গেলে তারা তাদের মারধর করে। পরে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মাসুদ রহমানের নেতৃত্বে ৩০০/৪০০ দুষ্কৃতী গ্রামে ঢুকে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ভাঙ্গচুর চালিয়ে লুটপাট করে এবং বোমাবাজি করে। ঘটনায় ৪ বিজেপি কর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন অনুপম মল্লিক।
যদিও উপপ্রধান মাসুদ রহমান বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, গত কয়েকদিন ধরে বিজেপি কর্মীরা ওই এলাকায় থাকা এক পঞ্চায়েত সদস্যাকে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছিল। এমনকি তৃণমূল করলে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। মাসুদ রহমান অভিযোগ করেন, শনিবার এক সুপারভাইজার পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়িতে গেলে বিজেপি কর্মীরা তাকে মারধর করে। ঘটনায় ওই পঞ্চায়েত সদস্যা প্রতিবাদ করলে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। পরে রবিবার বিজেপি কর্মীরা তার বাড়িতে হামলা চালায়। তিনি জানান, দলের সদস্যার বাড়িতে হামলা চালানোর খবর শুনে দলের কর্মীরা সেখানে গেলে বিজেপি কর্মীরা তাদের মারধর করে ও তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনায় তাদের দুই কর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন উপপ্রধান।
ঘটনা সম্পর্কে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিষ মৌর্য জানান, দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বাড়ি ভাঙ্গচুর হয়েছে কিন্তু বোমাবাজি বা গুলি চালানোর কোনো ঘটনার প্রমাণ আমরা পাইনি। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।