অগ্নিগর্ভ বাগনানের গোপালপুর, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বাড়ি ভাঙ্গচুর

আমাদের ভারত, হাওড়া, ২৫ জুন: মেয়ের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে তৃণমূল নেতার হাতে মায়ের খুন হওয়ার ঘটনায় বুধবার বিকেল থেকেই উত্তেজনার পারদ চড়ছিল বাগনানের গোপালপুর গ্রামে। আর বৃহস্পতিবার সেই উত্তেজনাকে কেন্দ্র করেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল গোপালপুর গ্রাম। মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় এদিন অভিযুক্ত বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতার বাড়ি ভাঙ্গচুরের পাশাপাশি পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল গোটা গ্রাম। যদিও পরে বিশাল পুলিশবাহিনী গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে মৃতার দেহ ময়নাতদন্তের পর তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর এরপরেই বিজেপি কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ নিয়ে সোজা চলে আসে উলুবেড়িয়া আদালতের সামনে। কোনও আইনজীবী যাতে অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল করতে না পারে সেই দাবিতে আদালতের সামনে রাস্তায় মৃতদেহ নামিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপি কর্মীরা। প্রায় ১৫ মিনিট বিক্ষোভ চলার পথ মৃতদেহ নিয়ে গোপালপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বিজেপি কর্মীরা।

এদিকে মৃতদেহ গ্রামে পৌছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসীরা। তারা মৃতদেহ অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। কয়েক হাজার গ্রামবাসীর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ চলাকালীন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার এক আত্মীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গ্রামের এক যুবককে আঘাত করলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এরপরে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তের পাশাপাশি তার আত্মীয়দের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙ্গচুর চালায়। পুলিশের সামনে ভাঙ্গচুর চালালেও সামান্য কয়েকজন পুলিশ কর্মী পরিস্থিতি সামলাতে না পারায় পরে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিষ মৌর্যর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী গ্রামে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় নামানো হয় র‍্যাফ।

এদিকে পুলিশের সামনেই গ্রামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করায় অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে গ্রামবাসীরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত পুলিশকে গ্রাম থেকে বের হতে দেওয়া হবে না বলেও দাবি জানাতে থাকে গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

অপরদিকে এদিন বিজেপি মহিলা মোর্চা সভানেত্রী অগ্নিমিত্র পাল গ্রামে পৌঁছলে তার সামনেই মৃতদেহ আটকে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপি কর্মীরা। পরে বিজেপি নেত্রী অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়। এদিন বিজেপি নেত্রী ছাড়াও মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন আমতার বিধায়ক অসিত মিত্র এবং মহিলা সমিতির সদস্যরা।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দুই অভিযুক্ত কুশ বেরা ও শোভন মন্ডলকে উলুবেড়িয়া আদালতের বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। যদিও এদিন জেলে যাওয়ার পথে কুশ নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। তার দাবি তাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *