মল্লারপুরের সভা থেকে বহিষ্কার করা হল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে

আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১১ জানুয়ারি: দুর্নীতি ও দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বহিষ্কার করা হল মুরারই ২ নম্বর ব্লকের মিত্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বাবুল আকতার ওরফে আপেলকে। শনিবার বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের মল্লারপুর শিববাড়ি মাঠের জনসভায় বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন অনুব্রত মণ্ডল।

প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেলের দিকে মিত্রপুর অঞ্চলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করতে যান নয়াগ্রামের এক গৃহবধূ। ওই গৃহবধূর অভিযোগ, তাকে প্রায় কু-প্রস্তাব দিতেন অঞ্চল সভাপতি বাসারুজ্জামান মোল্লা ওরফে বকুল। তাতে রাজি না হওয়ায় স্বাথ্যসাথী কার্ডের লাইন থেকে বের করে দেয়। স্বামী প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন গৃহবধূ। তাকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গৃহবধূ অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে পাইকর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এই ঘটনার পিছনে নয়াগ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের বাবুক আকতার ওরফে আপেলের হাত রয়েছে বলে দাবি অঞ্চল সভাপতির। তার বিরুদ্ধে শুক্রবার পঞ্চায়েতের ১৯ জন সদস্য এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৩ জন এবং ২৩ জন বুথ সভাপতি পদত্যাগ করেছিলেন। শনিবার বিকেলে মল্লারপুরের জনসভা থেকে ওই সদস্যকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন অনুব্রত। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

অনুব্রত বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্য হয়ে কোনও রকম দুর্নীতি করা যাবে না। মানুষের সেবা করার জন্য তিনি পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছেন। কিন্তু তিনি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাই তাকে বহিষ্কার করা হল। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক”।

যদিও দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আপেল শেখ। তিনি বলেন, “এক গৃহবধূ ও তার স্বামীকে মারধর করেছে অঞ্চল সভাপতি। ঘটনা চক্রে ওই দম্পত্তি আমার গ্রামের বাসিন্দা। তাই ওরা ভাবছে আমি ওদের দিয়ে থানায় অভিযোগ করিয়েছি। আমাদের অঞ্চল সভাপতি নিজে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। আবার তার স্ত্রী প্রধান। স্ত্রী আবার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। শ্বশুর মশাই ব্লক সভাপতি। এছাড়াও একাধিক পদ আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। এক সময় তিনি ছিলেন গাড়ির চালক। এখন তার সম্পত্তি দেখুন তাহলেই বোঝা যাবে কে দুর্নীতিগ্রস্থ। আমি এখন হাতে বহিষ্কারের চিঠি পাইনি। চিঠি হাতে পেলে তখন পদক্ষেপ নেব”।

এদিকে এদিনের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন অনুব্রত। তিনি বলেন, “আজ পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। কি করতে এসেছেন জানি না। পশ্চিমবঙ্গের অনেক প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আপনি দেখে যান একটি ব্লকের জনসভায় কত লোক জমায়েত হয়েছেন। দেখলে আপনার চাঁদি উড়ে যাবে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *