
স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ২৯ মে:
ঝড় বৃষ্টির রাতে পরিকল্পনা করে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার বিজেপির।
ঝড় জলের রাতে বাড়ির ভিতর ঢুকে এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল নদিয়ার রাঘবপুরে। সূত্রের খবর, রানাঘাট থানার রাঘবপুর খ্রিষ্টান পাড়ার বাসিন্দা পেশায় ইমারত সামগ্রীর ব্যবসায়ী অজিত দাস বুধবার ঝড় শুরু হওয়ার পর তার নিজের ঘরেই ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় কিছু দুষ্কৃতি তার ঘরে ঢুকে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রানাঘাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। যদিও বিজেপির অভিযোগ, খুন হওয়া যুবক জুয়ার বোর্ড চালাত এবং একাধিক মামলায় সে অভিযুক্ত। অবৈধ লেনদেন এবং জুয়ার বোর্ডের হিস্যা নিয়ে গন্ডগোলের জেরেই এই খুন। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাঘবপুর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি
জানান, কিছুদিন আগে শান্তিপুরে সাট্টার বোর্ড চালাতে গিয়ে একইভাবে খুন হয় এক যুবক। সেখানেও শাসকদলের এক পক্ষ দাবি করে যে খুন হওয়া যুবক তৃণমূলের একজন সক্রিয় কর্মী তার জের এখনো কাটেনি। সেই কাদা ছোড়াছুড়ি শেষ না হতেই আবার জুয়ার বোর্ড চালাতে গিয়ে আর একজন খুন। এখানেও শাসকদলের দাবি অভিযুক্ত শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। এখনতো দলের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
হবিবপুর পঞ্চায়েতের সভাপতি তাপস ঘোষ জানান, খুন হওয়া যুবক আমাদের তৃণমূলের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিল। ও স্বাভাবিক ভাবেই জীবন যাপন করছিল। পার্টির কোনো কর্মসূচি হলে যতটা সম্ভব সেখানে অংশগ্রহণ করত। গতকাল রাতে ঝড়ের পরে নৃশংসভাবে ওকে খুন করা হয়েছে। এটা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা মাফিক তাকে খুন করা হয়েছে। গতকাল যখন ঝড়ের পর বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না ঠিক সেই সময় ও একা ঘরে ছিল। তখনই সমাজবিরোধীরা নিশংসভাবে ওকে খুন করে। আমরা পুলিশের উপরে সম্পন্ন আস্থাশীল। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি উপযুক্ত তদন্ত করে যারা প্রকৃত খুনি তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এ বিষয়ে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন প্রতিষ্ঠিত ক্রিমিনাল যার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং যিনি জুয়ার বোর্ড চালাত লোকাল সূত্রে আমি জেনেছি। এই ধরনের প্রতিষ্ঠিত ক্রিমিনাল নিজেদের অন্তর্দলীয় টাকা-পয়সা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোল করে। জানিনা কে বিজেপির নামে বদনাম করছে। বিজেপি খুন খারাপিতে যুক্ত থাকে না। সম্ভবত যিনি বদনাম দিয়েছেন দেখা যাবে যে তারই হয়তো অবৈধ লেনদেন, জুয়ার বোর্ডের হিসসা পাননি বলে তারই লোক দিয়ে মার্ডার করিয়ে দিয়েছেন এটাও হতে পারে। তাই বিজেপি খুনখারাপিতে যুক্ত থাকে না আর ক্রিমিনাল মানে তৃণমূলেরই হবে এটা ঠিকই বলেছে। তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ক্রিমিনাল ছাড়া এখন আর কেউ নেই। সাধারণ ভালো মানুষ আর তৃণমূলে কেউ নেই। তারা হয় বসে গেছে না হয় বিজেপিতে যোগ দিয়েছে।