জে মাহাতো, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ২৫ সেপ্টেম্বর:
বিধানসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে সবাইকে নিয়ে চলার জন্য ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটি গঠন করেছে তৃণমূল। জঙ্গলমহলে দলের বড়সড় গোদ হয়ে রয়েছে বিজেপি। তার ওপর শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে রয়েছে বিষফোড়ার আশঙ্কা। তাই সবদিক আঁচ করেই জেলায় মিলিজুলি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পর লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে মুখ থুবড়ে পড়ে শাসক দল। পঞ্চায়েতে ধাক্কা খাওয়ার পর লোকসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে প্রার্থী বদল করা হয়। চূড়ামণি মাহাতোকে সরিয়ে দেওয়া হয় মন্ত্রিত্ব থেকে। আদিবাসীদের ভোট পেতে প্রার্থী করা হয় আদিবাসী সমাজ সংগঠনের অন্যতম নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী বিরবাহা সরেনকে। কিন্তু এই সকল সিদ্ধান্ত বা রদবদল কোনও কাজ করেনি। শুধু তাই নয়, জঙ্গলমহলে তৃণমূলের কাজকর্মে বিক্ষুব্ধ মানুষের কাছে কোনও কাজ করেনি মমতা ম্যাজিকও। শাসক দলের থেকে জঙ্গলমহলের একটা বড় অংশের মানুষের এই মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্বেগে অন্য মাত্রা যোগ করেছে শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূলের বাইরের সামাজিক উদ্যোগ। তাই, দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে একুশের বৈতরণী পার হওয়ার লক্ষ্যে সবাইকে নিয়ে চলার কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা কমিটিতে তাই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ জামবনির নিশীথ মাহাতোকে এবং লালগড়ের তন্ময় রায়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনের ভরাডুবির কথা মাথায় রেখে এবং সামনের বিধানসভা নির্বাচন ঘুরে দাঁড়াতে কাউকেই কোনও পদ থেকে না সরিয়ে শুধু মাত্র কিছুটা এদিক-ওদিক করা হয়েছে। জেলার নয়টি ব্লকের তিনটির সভাপতি বিভিন্ন পদে থাকায় তাদের জায়গায় নতুন মুখ আনা হয়েছে। এই তিনটি ব্লক হল নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর ১ এবং সাঁকরাইল। জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ক্ষেত্রে সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে। সত্য রঞ্জন বারিকের জায়গায় টিএমসিপির নতুন জেলা সভাপতি করা হয়েছে আর্য ঘোষকে। জেলার মহিলা সংগঠনের দলনেত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে অনুশ্রী করকে। বিধানসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৩ জুলাই বিরবাহা সরেনকে সরিয়ে জেলার নতুন সভাপতি করেন নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মুকে। নতুন সভাপতি হওয়ার পর তার নেতৃত্বে বুধবারের এই রদবদল এবং শুভেন্দুকে সমঝে চলা লোকসভা ভোটে প্রায় সব কটি বিধানসভা পিছিয়ে থাকা তৃণমূলকে সামনে এনে দাঁড় করাতে পারবে কি না জঙ্গলমহলে সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।