সুকান্ত’র কটাক্ষের বাস্তবায়ন! শিবসেনার নিশানায় তৃণমূল

আমাদের ভারত, ৯ আগস্ট: বিরোধীদের মধ্যে তৃণমূলের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে দুদিন আগেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার খোঁচা দিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছিলেন, তার প্রতিফলন ঘটে গেল শিবসেনার মুখপত্র সামনায়। উপরাষ্ট্রপতি পদে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করল শিবসেনা মুখপত্র ‘সামনা’। ইডি সিবিআইয়ের ভয়েই তৃণমূল উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিরোধী জোটের প্রার্থীকে সমর্থনে পিছিয়ে গেল কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ‘সামনা’র সম্পাদকীয়তে।

সামনায় অভিযোগ করা হয়েছে তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে তৃণমূল উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দানে বিরত থেকেছে। আর কয়েক দিন আগেই দিল্লিতে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বিরোধীদের মধ্যে তৃণমূলের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষের সুরে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তার কথায় তৃণমূলকে কি কেউ বিশ্বাস করে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে যেভাবে তৃণমূল নিজের অবস্থান বদল করেছেন তাতে স্বাভাবিক ভাবেই দিল্লির রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপাংক্তেয় থাকবেন। কারণ তার বিশ্বাসযোগ্যতা তলানীতে। তাঁর কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্বাস করার চেয়ে সাপকে বিশ্বাস করা ভালো। আর সুকান্ত’র সেই কটাক্ষ এক রকম সত্যি করে দিল শিবসেনা।

ইডি শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতকে গ্রেফতারের পর উদ্ধবই এখন মুখপত্রের সম্পাদক। ফলে সামনার সম্পাদকীয় আসলে উদ্ধব ঠাকরের বক্তব্য বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। সামনা সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের তুলনা টেনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মতো কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ইডি সিবিআই সক্রিয়। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব রাস্তায় নেমে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। কিন্তু তৃণমূল তাতে নেই।

উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জগদীপ ধনকড়ের জয়ের পর বিরোধী জোটের প্রার্থী মার্গারেট আলভা বলেছিলেন, তৃণমূল ভোটদানে বিরত থেকে আসলে বিজেপির হাত শক্ত করেছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ তৃণমূলের সিদ্ধান্তকে ভুল বলে বর্ণনা করেছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে সোনিয়া গান্ধী ও শরদ পাওয়ার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে কথা বলেছেন অথচ তার পরেও তৃণমূল বিরোধীদের বৈঠকে যোগ না দিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি বলে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।

আজ সামনার সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে এটা খুব গুরুতর বিষয় উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন তৃণমূলের সাংসদরা ভোট দেননি, তাও খুব তুচ্ছ বিষয়কে অজুহাত করে। ইডি সিবিআইয়ের কার্যকলাপ পশ্চিমবঙ্গে বাড়ছে, রাহুল সোনিয়া গান্ধীকে নিশানা করেছে। তা সত্ত্বেও তারা রাস্তায় নেমে মূল্যবৃদ্ধি বেকারত্বের বিরুদ্ধে লড়ছেন। শিবসেনার মতে এখন নিজেদের মতভেদ ভুলে বিরোধী দলগুলোকে একাট্টা হতে হবে। বিরোধীদের বিভাজন আসলে বিজেপির শক্তি।

যদিও শিবসেনার তোপের জবাবে তৃণমূল লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শিবসেনার মুখপত্রে কি বলল আমাদের কিছু যায় আসে না। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় তৃণমূল নেত্রী বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে সবরকম চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু কোনোভাবেই তার সঙ্গে সহযোগিতা করা হয়নি। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থীর নূন্যতম আলোচনা পর্যন্ত করা হয়নি। শিবসেনা নিজেই তো বহুদিন বিজেপির সঙ্গে ছিল। মুখ্যমন্ত্রী হবার জন্য উদ্ধব ঠাকরে বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছিলেন। এখন শিবসেনার একটা অংশ বিজেপির সঙ্গে। তাই শিবসেনা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন নেই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *