টুসু পরবে মাতলেন পুরুলিয়াবাসী, আবেগে ভাসল চৌডল  

সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ১৫ জানুয়ারি: নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চৌডল ও টুসু গানের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আপামর পুরুলিয়াবাসীর প্রতীক্ষিত টুসু পরবের সমাপ্তি ঘটল। দিনভর কোথাও কোথাও হল বস্ত্র বিতরণ, মেলা ও বিচিত্রানুষ্ঠানও। শিল্পী আর শিল্প ভাবনার মিশেলে গড়ে তোলা চৌডল প্রতিযোগিতা জমে উঠল পুরুলিয়ায়। 

মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত পুরুলিয়া জেলা তথা সাবেক মানভূমের ঐতিহ্যবাহী এই রঙিন প্রতিযোগিতায় জয়ী হল পুরুলিয়ার কৃষ্টি আর সংস্কৃতি। সেই কৃষ্টি এবং সংস্কৃতির বাহকরা পুরস্কৃতও হলেন। পুরুলিয়া জেলা জুড়ে এই চিত্র দেখা গেল জেলা সদর শহরের কাছে কাঁসাই নদীর পাড়ে। চৌডল প্রতিযোগিতা, বিসর্জন ছাড়াও মকর স্নান ও পিঠে পুলি খেতে হাজার হাজার মানুষ চার দেওয়ালের গন্ডি থেকে বেরিয়ে হাজির হয়েছিলেন জয়পুরের দেউলঘাটা, ঝালদার তুলিনে সুবর্ণরেখা নদীর তীরে, নিতুড়িয়ার দামোদর নদের তীরে। এছাড়া কাঁসাই নদির পাড়ে মহাদেববেড়া, টটকো নদী, শিলাই নদী, দ্বারকেশর নদী, কুমারী নদী ও ছোট ছোট জোড়গুলিতেও উৎসব প্রেমী মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।
   

মানভূম কালচারাল একাডেমি, জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতর যৌথভাবে এবং পুরুলিয়া -১ পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে তৃতীয় বছরে পা দিল। শিমুলিয়া গ্রামের কাছে কাঁসাই নদির সংলগ্ন স্থানে প্রতিযোগিতামূলক টুসু গান অনুষ্ঠিত হয়। চৌডল নিয়ে পঞ্চাশেরও বেশি দল এই প্রাচীন জনপ্রিয় এই লোক সঙ্গীত উপস্থাপন করেন। প্রতিযোগিতার শেষে সফল দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এর আগে প্রদীপ প্রজ্জ্বোলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। উপস্থিত ছিলেন তথ্য সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক পল্লব পাল সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনরা। অনুষ্ঠানের আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলে বিভিন্ন আকারের রংবেরঙের চৌডল। জেলার লোক সংস্কৃতির স্বার্থে কাঁসাই নদীর ওই পাড়েই একটি স্থায়ী মঞ্চ গড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। সুদৃশ্য চৌডোলের আদলে তৈরি হবে মঞ্চ। ওই মঞ্চেই পরবর্তি সময়ে অনুষ্ঠিত হবে টুসু পরব।
 

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here