সুুুশান্ত ঘোষ, হাবড়া, ৪ এপ্রিল: খেলনা কেনার জন্য তিল তিল করে জমানো শেষ সম্বলটুকু নিজেদের ইচ্ছায় তুলে দিল “করোনা ভাইরাস” বিপর্যয়ের মোকাবিলার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রাণ তহবিলে। উত্তর ২৪ পরগনা হাবড়া ও গোবরডাঙ্গার দুুুই ক্ষুদে। এক দিকে হাবড়ার পশ্চিম কামারথোমার বাসিন্দা উৎপল রায় তার ৭ বছর বয়সী ছেলে উৎসব রায় মা শীলা রায়কে নিয়ে হাবড়া থানার আইসি গৌতম মিত্রের হাতে চেক তুলে দেয়। বাড়ির ছোট ছেলে উৎসবকে পরিবারের যে যা টাকা খাবার খেতে দেয় সেই টাকা সে একটি ঘটে জমায়। সেই টাকা দিয়ে জন্মদিনে নিজের জন্য কিছু খেলনা কেনে। সম্প্রতি করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার সকলের কাছে অর্থ সাহায্য চাইছেন। যা খবরে দেখে উৎসব বাড়িতে জানায় তার ঘটে জমানো টাকা দান করবে। শীলাদেবী ছেলেকে ও ছেলের টাকার ঘট নিয়ে হাবড়া থানায় আসেন।
অন্যদিকে ৬ বছর বয়সী ছোট্ট মেয়ে দেবাঙ্কিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ হেন মানসিকতা দেখে তাজ্জব সকলেই। বেসকারি ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া এই মেয়ে গানের সঙ্গে যুক্ত। বিগত দিনগুলোতে গানের ফাংশানগুলোতে টাকা পেয়ে পুজোর আগে বহু গরিব ছেলে মেয়েদের পাশাপাশি তাদের মায়েদের হাতে নতুন পোশাক দেওয়ার পাশাপাশি দুপুরে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা হয় তার ইচ্ছায়। এছাড়াও প্রতিদিনই দুঃস্থ মানুষের সেবার কাজে অর্থ দান করা তার নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনার মধ্যে পড়ে। সে গরিব মানুষের বিয়ে হোক কিংবা কারোর শরীর খারাপ হোক না কেন। সম্প্রতি “করোনা ভাইরাস” এর জেরে সে এখন ঘরে গৃহবন্দি। এ রাজ্যের মানুষ যাতে সুস্থ স্বাভাবিক ছন্দে আগের মতো ফিরে আসতে পারে ও” করোনা ভাইরাস” যাতে বিনষ্ট হয় সেজন্য বর্তমানে ঠাকুরের কাছে মাথা ঠুকছে সে।” করোনা ভাইরাস” কবলের জেরে লক ডাউন চলছে। ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না সেও। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনার মোকাবিলায় রাত দিন জেগে নিজের জীবনকে বাজি রেখে দৌঁড়াচ্ছেন। এই খবর সে বারংবার টিভির পর্দায় দেখেছে কার্টুন বাদ দিয়ে। প্রতিদিনই সে পাগলের মতো বলতে থাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থেকে মানুষকে সেবা করার। বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। এখন ঘরে গৃহবন্দি সে। বার্ষিক পরীক্ষার পর একটা খেলনা কিনবে বলে তিল তিল করে পয়সা জমাচ্ছিল সে। কিন্তু সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের জেরে তার মন কেঁদে উঠেছিল। খেলনা না কিনে খেলনা কেনার জন্য জমানো ১০০০০ টাকা পুরোটাই তুলে দিল মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। ছোট্ট মেয়ের এই ধরনের মন মানসিকতা দেখে খুশী তার অভিভাবক থেকে শুরু করে তার প্রতিবেশীরাও।