ফের জমা জলের কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দুজনের, ক্রমেই বাড়ছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা

আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ২৩ সেপ্টেম্বর: খড়দহের পাতুলিয়ার পর ফের জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল আগরপাড়া তারাপুকুর পশ্চিম পল্লীর এক বৃদ্ধের।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, অবসরপ্রাপ্ত বীমা কর্মী দীপক চৌধুরী, ৬৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ রাতে খাওয়া সেরে বাড়ির লোহার গেট বন্ধ করবার জন্য বেরিয়েছিলেন। তাঁর বাড়ির সামনে জমেছিল জল। ওই লোহার গেট সংলগ্ন কলিংবেলের তার থেকে জমা জল ও লোহার গেট শর্ট-সার্কিট হয়ে যায় বলে অনুমান স্থানীয়দের। সেই সময় গেটে হাত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাড়ির সামনেই জমা জলে পড়ে যান দীপকবাবু। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তাকে বলরাম সেবা মন্দির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে ওই এলাকায়।

অপর দিকে বৃষ্টিতে এখনও জলমগ্ন হয়ে রয়েছে কামারহাটি ও বেলঘরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক কারখানার শ্রমিকের। বৃহস্পতিবার সকালে বেলঘড়িয়া টেক্সমেকো কারখানায় জমা জলে বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে মারা গেলেন ওই কারখানার শ্রমিক সোনা রায়। বছর ৪০ এর এই শ্রমিক জমা জলের মধ্যে কাজ করতে আসেন কারখানায়। কর্তৃপক্ষ জোর করে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাতো এমনটাই অভিযোগ শ্রমিকদের। তাকে উদ্ধার করে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। এরপর সহকর্মীরা হাসপাতলে মৃতদেহ ঘিরে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তাদের অভিযোগ, কারখানায় সেই ভাবে কেউ এসে কাজ করতে চাইছে না কিন্তু চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের জোর করে আনা হচ্ছে। আর এই জলে দাঁড়িয়ে সারা দিন রাত কাজ করতে হচ্ছে। আর এই জন্যই প্রাণ চলে গেল আমাদের সহকর্মীর।”

তবে জমা জলের কারণে রোজ রোজ এই ভাবে সাধারণ মানুষের প্রাণ যাওয়ায় প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর আগে খড়দা, পতুলিয়াতে এই জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক পরিবারের ৩ জনের। তারপর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সরকারি কোয়ার্টারের থাকা সমস্ত বাসিন্দাদের ইতিমধ্যেই আবাসন ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার পতুলিয়ার ওই এলাকা পরিদর্শনে আসেন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ রেহানা খাতুন। তিনি জানান, “মৃত দাস পরিবারের ছোট ছেলে যে জীবিত আছে তাকে ছয় লক্ষ টাকা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। যেহেতু শিশুটি নাবালক সেই জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *