আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ২৮ জুলাই: দল থেকে বহিষ্কার করা হল জেলা বিজেপির দুই প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদককে। মঙ্গলবার সিউড়িতে দলীয় কার্যালয়ে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন দলের বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। বর্ষীয়ান দুই নেতাকে বহিষ্কারের ফলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হল বলে মনে করছেন দলের একাংশ।
রামকৃষ্ণ রায় বীরভূম জেলা সভাপতি থাকাকালীন বহিষ্কৃত জেলা সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডল ছিলেন দলের লড়াকু সৈনিক। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ায় জেলা শাসকের অফিসে স্মারকলিপি দিতে গেলে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তার পিছনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। তাছাড়াও তাকে একাধিক বার খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। আক্রান্ত নেতাদের দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় দলের পক্ষ থেকে। কথা হয় রাজনাথ সিং এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। কিন্তু রামকৃষ্ণবাবুর বিরুদ্ধে দলের একটি বড় অংশ ক্ষুব্ধ হওয়ায় রাজ্য নেতৃত্ব বীরভূমে গোষ্ঠীকোন্দল রুখতে পাঠান দলের রাজ্য সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডলকে। শ্যামাপদবাবু জেলা সভাপতি হিসাবে পূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার পর মণ্ডল কমিটি গঠন করেন। অভিযোগ, দলের অধিকাংশ পুরনো কার্যকর্তাদের বাদ দিয়ে নতুন মুখ আনা হয়েছে কমিটিতে। এনিয়েই শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। অভিযোগ ওঠে অনেক জায়গায় অযোগ্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতিটি মণ্ডলে প্রাক্তন কার্যকর্তারা পৃথক সভা সমিতি করে চলেছেন। শেষ পর্যন্ত দুই শীর্ষনেতাকে বহিষ্কার করে বাকিদেরও বার্তা দিলেন জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। কালোসোনা মণ্ডলকে তিন বছর এবং প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দেবাশিস মিত্র ওরফে পলাশকে চার বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
শ্যামাপদবাবু বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ওই দুই নেতা দল বিরোধী কার্যকলাপ করছিলেন। আমরা সমস্ত প্রমাণ হাতে পেয়ে তাদের বহিষ্কার করেছি”।
কালোসোনা মণ্ডল বলেন,“হিন্দুশাস্ত্রে এরকম আছে। কুঁজি মন্থরা এবং কৈকেয়ীর জন্য রামচন্দ্রকে বনবাসে যেতে হয়েছিল। পান্ডবরা কৌরবদের চক্রান্তের শিকার হয়ে ১২ বছরের বনবাস ও ১ বছরের অজ্ঞাতবাসে যেতে বাধ্য হন। এখনেও সেই চক্রান্ত চলছে। যাকে দলের দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য জেলায় পাঠানো হল তিনিই দলকে টুকরো করছেন। এতে লাভবান হবে তৃণমূল। তবে আমি বিজেপি ছাড়ব না। বিজেপি ছাড়লে ভারত মায়ের সঙ্গে বেইমানি করা হবে”। তার অভিযোগ, এখন জেলা বিজেপি বালি মাফিয়াদের নিয়ে ঘর করছে। অবিলম্বে তদন্ত করা প্রয়োজন। তবে পলাশবাবুর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।