করোনায় বাবা মাকে হারিয়ে মুম্বাইয়ের ফ্ল্যাটে কাঁদছে দুই ছেলে

আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ জুন: করোনার ছোবলে মা বাবাকে হারিয়ে মুম্বাইয়ের  ফ্ল্যাটে বসে কেঁদে চলেছে দাসপুরের দুই ভাই। করাল করোনা তাদের অনাথ করে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় ভরসা। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের যুবক  অজিত পারুই পঁয়ত্রিশ বছর আগে সোনার কাজ শিখতে পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বাই শহরে। সোনার চেন পালিশ করা থেকে ধীরে ধীরে গহনা বানানোর কারিগর হয়ে ওঠেন তিনি।

বছর পাঁচেক কাজ করার পর জহুরি বাজারের একটি জুয়েলারি দোকানের মালিক হন। যে দোকানে কোটি কোটি টাকার সোনার গহনা বিক্রি হয় এবং প্রায় চল্লিশ জন কর্মচারী কাজ করে। জহুরি হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর তিনি বিয়ে করেন এবং সুমন ও রৌনক নামে তার দুটি সন্তানের জন্ম হয়। সুমন বর্তমানে কলেজে পড়াশোনা করে এবং সুমন নবম শ্রেণির ছাত্র। তারা মুম্বাইয়ের লালা সুপার এলাকার একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে থাকতেন। সেখানেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত  একত্রিশ মে পঞ্চান্ন বছর বয়সে অজিত বাবু মারা যান। এরপরই এগারো দিন পরে আটচল্লিশ বছর বয়সে মারা যান তার স্ত্রী ঝুমা দেবীও।

বাবার মৃত্যুর পর মাকেও হারিয়ে একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে দুই ভাইয়ের সুখের জীবন। করোনা সংক্রমণে হু হু করে মৃত্যুর হার বাড়তে থাকায় আতঙ্ক নগরিতে পরিণত হয়েছে মুম্বাই। রৌণক এবং সুমনকে প্রতিবেশীরা বাড়ির বাইরে বের হতে বারণ করেছে। মৃত অজিতবাবুর দাদা তাপস পারুই বলেন, ফ্লাটের পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে তাদের ফ্লাটের সিঁড়ির কাছে তিন বেলা খাবার রেখে দেওয়া হচ্ছে। বহু কষ্টের মধ্যে এভাবেই ছেলে দুটি বেঁচে রয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে কোটি টাকার সোনার দোকান। কর্মচারীরাও বিধি-নিষেধের জালে আটকে পড়ে তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না, একই ফ্ল্যাটে করোনা আক্রান্ত দম্পতির মৃত্যু হওয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *