রাজেন রায়, কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর: মন্ত্রীদের সামনেই প্রবল বিক্ষোভ অসংগঠিত শ্রমিকদের। সোমবার বিকেলে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটল নেতাজি ইনডোর চত্বরে। সোমবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ছিল এসএলও সংগঠনের মহাসমাবেশ। সেই অনুষ্ঠানে আসা সেল্ফ এমপ্লয়েড লেবার অর্গানাইজার বা এসএলও কর্মীরা আশা করেছিলেন, তাদের সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে কিছু ঘোষণা করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু এই সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারা প্রবল বিক্ষোভ শুরু করেন। রীতিমতো ঘেরাও করে ফেলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে। কোনওমতে উদ্ধার করে তাকে ভিতরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছে হেয়ার স্ট্রিট থানা ও লালবাজারের বিশাল পুলিশ বাহিনী।
সংগঠনের কর্মীদের দাবি, তাঁদের বেতন পরিকাঠামো থেকে সামাজিক সুরক্ষা, কোনও কিছু নিয়েই এতদিন পর্যন্ত চিন্তা-ভাবনা করেনি সরকার। এদিনের সমাবেশ থেকে এ সংক্রান্ত কোনও স্পষ্ট বার্তা মিলবে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, পুরনো আশ্বাস, প্রতিশ্রুতিই শুনিয়ে গেলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। প্রথমে নেতাজি ইনডোরের ভিতরে তারা বিক্ষোভ দেখান। এরপর একে একে ফিরহাদ হাকিম, সাধন পাণ্ডে, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মতো রাজ্যের মন্ত্রীরা বেরিয়ে যাওয়া পরই স্টেডিয়ামের বাইরে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের মাঝে পড়েন মলয় ঘটক। কোনওমতে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হলেও পথ অবরোধ, অবস্থানে এসএলও কর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে।
গোটা রাজ্যে প্রায় ৬৫০০ জন শ্রমিক বন্ধু বা এসএলও কর্মী রয়েছেন। নির্মাণ কর্মী, রিকশা চালক-সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের কাছ থেকে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা ফর্ম পূরণ করে সেগুলি অনলাইন পোর্টালে এন্ট্রি ও গ্রাহকদের কাগজ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন। অসংগঠিত শ্রমিকদের সমস্ত রকম সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়াই এই শ্রমিক বন্ধুদের কাজ। তবে তাঁদের আয় একেবারেই সামান্য। ফর্ম প্রতি যে কমিশন পান তা মাত্র ২ টাকা। অভিযোগ, এপ্রিল মাস থেকে সরকার গ্রাহকদের যেহেতু যোজনার টাকা সরাসরি দিয়ে দিচ্ছে, তাঁদেরও কমিশন বন্ধ। এদিনের সমাবেশে কোনও স্থায়ী সুরাহা মিলবে বলেই আশা করেছিলেন, কিন্তু তেমনটা হয়নি।