আমাদের ভারত, ৭ জানুয়ারি: তাকে ভোটে জিততে সাহায্য করেছেন বামপন্থী হিন্দুরা। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে এমনটাই বলেছেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে নয়া জল্পনা।
বিরোধী দলনেতার দাবি, ২০২১ সালের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন বামপন্থী হিন্দুদের ভোটের জন্য। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ওপর ভর করে বাম সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের জয়ী তৃণমূল ত্যাগী সেই শুভেন্দু নন্দীগ্রামের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান থেকে স্বীকার করলেন তার জেতার পেছনে হাত রয়েছে বামপন্থী হিন্দুদের।
শনিবার নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুর আক্রমণ, “উনি দিদি থেকে দিদিমা হয়ে যেতেন যদি না নন্দীগ্রাম থাকতো।” তারপরেই তিনি বলেন, এদের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল সিপিএম। অনেক বেশি ক্ষমতা ছিল বামফ্রন্ট সরকারের। বামপন্থীরা সবাই খারাপ নন আমাদের সঙ্গে প্রচুর বামপন্থী এসেছেন। নন্দীগ্রামে একটা বড় অংশ যারা হিন্দু তারা ভোট দিয়েছেন বলেই আমরা জিতেছি অকপটে স্বীকার করি।
দীর্ঘ সময় নন্দীগ্রাম শক্ত ঘাঁটি ছিল বামেদেরও। একটানা সেখানে জয়ী হয়েছে সিপিআই প্রার্থী। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দুর যুদ্ধে বাম কংগ্রেস জোট প্রার্থী ছিলেন সিপিএমের নতুন মুখ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তৃতীয় স্থানে ছিলেন মীনাক্ষী। এদিকে ২০০০ এরও কম ভোটে মমতাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন শুভেন্দু। যদিও গণনা প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে গিয়েছিল তৃণমূল। যে মামলা এখনো চলছে। তবে অনেকেরই ব্যাখ্যা শুভেন্দুকে নন্দীগ্রামে জিততে সাহায্য করেছিল সেখানকার বাম ভোট। শুভেন্দুও প্রচারের সময় বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। বামপন্থীদের উদ্দেশ্যে তার ব্যাখ্যা ছিল তৃণমূল জয়লাভ করলে কোনো বিরোধী শক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না, তাই গণতন্ত্রের স্বার্থে বিজেপিকে বামপন্থীরা ভোট দিক।
শনিবার শহিদ দিবসে তৃণমূল বিজেপি দড়ি টানাটানির মধ্যে সেই বামেদের ধন্যবাদ জানালেন বিজেপি বিধায়ক, যা পঞ্চায়েত ভোটের আগেই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ইতিমধ্যে বামের ভোট রামে এই তত্ত্বের আলোচনা এখন তুঙ্গে। এমনকি নিচু তলায় বাম বিজেপির জোট নিয়েও চলছে নানা জল্পনা। আর তার মধ্যেই বিধানসভা ভোটের এতদিন পর বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বামেদের ধন্যবাদ জানালেন নিজের জয়ের জন্য।