সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ১৫ মে: মহকুমা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ সুদৃঢ় করতে নিজেদের উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণ করলেন গ্রামবাসীরা। ঝালদা ১নম্বর ব্লকের কৃষ্ণপুর নতুনডি গ্রামের মানুষ লকডাউনে ঘরে না বসে গ্রামের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধানে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করলেন।
লকডাউনে সকলেই গৃহবন্দি। অসময়েও দুশ্চিন্তার মধ্যেও দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজছিলেন গ্রামবাসীরা। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, এটা ফের প্রমাণ করলেন প্রান্তিক এই জনপদের বাসিন্দারা। আশপাশের কয়েকটি গ্রাম মিলে সিদ্ধান্ত হয় নতুন রাস্তা নির্মাণের। সেই মতো জমি দান ও সাধ্যমতো অর্থ দান করেন তাঁরা। সর্বজনীন এই কাজে হাত লাগিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। রাস্তাটি প্রায় ১৫ ফুট চওড়া ও দুই কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। কৃষ্ণপুর নতুনডি থেকে চাতামঘুটু পর্যন্ত। যাতে ঝালদা মহকুমা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে সব ক্ষেত্রেই।
অন্যদিকে, তানাশী গ্রাম থেকে জজলং পর্যন্ত নতুন রাস্তা তৈরী করছেন একইভাবে একই উদ্দেশ্যে।
এখন দুটি গ্রামের মানুষের একটাই বক্তব্য, আগামী দিনে যেন এই রাস্তা প্রশাসনিক স্বীকৃতি পায় ও রক্ষণা বেক্ষণ হয়।
কোভিড ১৯ আবহে এবং টানা লকডাউনে দিশেহারা মানুষ সেই আঙ্গিকে এই রকম চিন্তা ভাবনা এল কী করে? প্রশ্নের উত্তরে গ্রামবাসী ভরত চন্দ্র মাহাতো ও বিকাশ মাহাতো জানান, আমাদের যে পুরানো রাস্তা ব্যবহার করি সেটা সংকীর্ণ। অ্যাম্বুলেন্স ঢুকে না। চাষের কাজে বড় গাড়ি যাতায়াত করা যায় না। দীর্ঘ ঘুর পথ দিয়ে রাস্তা রয়েছে সেটা উপযোগী নয়। তাই, আমরা নিজেরাই রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নিলাম। অনেকে নিজেদের চাষযোগ্য জমি সবার স্বার্থে দান করেন।
করোনা একদিকে যেমন মহামারির আকার ধারণ করেছে গোটা বিশ্বে, তেমনি অন্যদিকে মানব কুলকে নতুন করে বেঁচে থাকার ভাবনা জোগাচ্ছে। সুচিন্তার অধিকারী করে তুলছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীবকে। প্রান্তিক জনপদগুলোতে সেই রেশ পৌঁছে দিচ্ছে। পুরুলিয়ার ঝালদার এই গ্রামগুলির উদ্যোগ তারই প্রকৃত উদাহরণ।