সিসিটিভি ফুটেজ দেখার চ্যালেঞ্জ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের, মিছিলে কাশ্মীরের মতো পাথর ছোড়া হয়েছে, অভিষেককে পাল্টা দিলেন পরিষদ নেতা

আমাদের ভারত, ৩১ মার্চ: পুলিশের দেওয়া নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে রামনবমীর মিছিল হয়নি বলে সরাসরি অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার পুলিশ প্রশাসনের তরফে যে চিঠি মিছিল কারীদের সংগঠনকে দেওয়া হয়েছিল তা জনসমক্ষে আনেন অভিষেক। তাঁর দাবি, গাইডলাইন সম্বলিত চিঠির কোনও জবাব দেয়নি, হিন্দু সংগঠনগুলি। তৃণমূল সর্বভারতীয় সম্পাদকের দাবি প্রশাসনের অনুমতি, আদালতের নির্দেশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের বিধি ছাড়া প্রত্যেক জায়গায় মিছিল করেছে এরা এবং প্রত্যেকটাই বেআইনি। কিন্তু অভিষেকের মন্তব্য প্রেক্ষিতে বাংলা দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সর্বভারতীয় সহ সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিং বলেন, পুলিশে দেওয়া শর্ত আমরা মেনেছি। পুলিশের সঙ্গে দুবার মিটিং হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় মিছিল হয়েছে। শুধুমাত্র হাওড়ার নির্দিষ্ট জায়গায় কেন অশান্তি হয়? এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। তিনি চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, সিসিটিভি দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করুক প্রশাসন, তাহলেই সত্য সামনে আসবে।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সর্বভারতীয় সহ-সম্পাদক বলেন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ভারতের সব থেকে বড় একটি ধার্মিক এবং সামাজিক সংগঠন। তাদের পরিচলনায় সারা দেশে রামনবমী পালিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে কয়েকটি জায়গায় রাম ভক্তদের উপর হামলা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন জেহাদিদেরই সমর্থন করছে। তারা জেহাদিদের হাত শক্ত করছে। রামভক্তদের দায়ী করে তাদের গ্রেফতার করছে।

কিন্তু, তৃণমূলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন, মিছিলের আবেদন জানালেও তার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তারপরেও হাওড়ার একটি জায়গায় মিছিল হয়েছে এবং সেখানে পুলিশ প্রশাসনে দেওয়া চারটি শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। অভিষেক বলেছেন, প্রশাসন প্রত্যেক শোভাযাত্রার অনুমতি দেবে কিন্তু সেই শোভাযাত্রা নির্দিষ্ট গাইড লাইন মেনে করতে হবে, আর আবেদন করা মানেই তো পারমিশন দিয়ে দেওয়া হলো এমনটা নয়। তাঁর অভিযোগ গায়ের জোরে মিছিল করে গুন্ডামি চালানো হয়েছে। পুলিশকে একটি চিঠি দেন হাওড়ার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা ইন্দ্রদেও দুবে। পুলিশের তরফে মোট চারটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠি পাওয়ার পর ২৮ মার্চ ইন্দ্রদেওকে উদ্দেশ্য করে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের তরফে চারটি বিষয়ে তাদের জবাব জানতে চাওয়া হয়। ২৯ মার্চের মধ্যে জবাব দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছিল র‍্যালি দুপুরে আড়াইটার সময় শুরু হবে পাঁচটায় শেষ হবে। সেটাও হয়নি।

অন্যদিকে দিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা সচিন্দ্র নাথ সিংহ বলেন, এই শোভাযাত্রা নিয়ে আগেই প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারপরেও কেন এরকম ঘটনা ঘটলো? এরপর আজও হাওড়ায় একই ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের যদি তাদের আগ্রহ থাকতো তাহলে দ্বিতীয়বার এরকম ঘটনা ঘটত না। তিনি সিসিটিভির ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সর্বভারতীয় সহ সম্পাদক বলেন, ভগবান রামচন্দ্র কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের নয়, তাই আগামী দিনে আমাদের আগ্রহ থাকবে এইরকম অনুষ্ঠানে সবাই যোগ দিন। কাশ্মীরে যেমন পাথর ছোড়া হয় হাওড়ায়ও সেইভাবে পাথর ছোড়া হয়েছে। আগে থেকেই ছাদের উপর পাথর জড়ো করে রাখা হয়েছিল, তা কি পুলিশ জানত না? হামলায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য তিনি প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। রামভক্তদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আগামী দিনে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here