নোবেলজয়ীকে উচ্ছেদ নোটিশ পাঠানোর প্রস্তুতি ও একই সাথে প্রচ্ছন্ন হুমকি বিশ্বভারতীর

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ১৮ মার্চ: নোবেলজয়ীকে উচ্ছেদ নোটিশ পাঠানোর প্রস্তুতি নিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, নোবেলজয়ী অমর্ত‍্য সেনকে কার্যত উচ্ছেদ নোটিশ পাঠানোর হুমকি দিয়ে রাখলো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর জয়েন্ট রেজিস্ট্রার ও এস্টেট অফিসারের তরফে শুক্রবার এক নোটিশ পাঠানো হয় অমর্ত‍্য সেনকে শান্তিনিকেতনের ঠিকানায়।

বর্তমানে নোবেলজয়ী বিদেশে আছেন। শুক্রবারের সেই নোটিশে বলা হয় যে চলতি বছরের ২৪ মার্চ বা তার আগে শোকজ পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হবে কেন নোবেলজয়ী অমর্ত‍্য সেনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের উচ্ছেদ আইন প্রয়োগ করা হবে না? কারণ তিনি অন‍্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে আছেন। এভাবেই নোবেলজয়ীকে শোকজ করার প্রস্তুতি সেরে রাখলো বিশ্বভারতী।

একইসঙ্গে, চলতি বছরের ২৯ মার্চ বিকেল পৌনে পাঁচটার মধ‍্যে অমর্ত‍্য সেনকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে বা তাঁর প্রতিনিধি পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনের সভাগৃহে নথিসহ দেখা করার কথা বলা হয়েছে। যদি এক্ষেত্রে সেই শুনানিতে অমর্ত‍্য সেন বা তাঁর পক্ষের কেউ গরহাজির হয়, সেই শুনানি “এক তরফা” হিসেবে ঘোষিত হবে এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে, এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

গোটা বিষয়টিকে বিভিন্ন মহল কর্তৃপক্ষের ঔদ্ধত‍্যপূর্ণ আচরণ বলে মনে করছে। কেন্দ্রীয় আইন, ক‍্যাগ অডিট রিপোর্ট, এক্সপার্ট কমিটির নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট, বিশ্বভারতীর সঙ্গে যুক্ত শিক্ষক, ছাত্র সবার জন‍্য জবর দখল মুক্ত রাস্তা ইত‍্যাদি সহ একাধিক কারণ দেখিয়ে ওই তেরো ডেসিমেল জায়গা জবর দখল মুক্ত করা জরুরি, বলে নোটিশে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তার যুক্তি খাঁড়া করেছে।

ওই নোটিশে জানানো হয়েছে যে, লিজ হিসেবে এক দশমিক পঁচিশ ডেসিমেল সম্পত্তি অমর্ত‍্য সেনের পিতা আশুতোষ সেনকে ৯৯ বছরের জন‍্য দেওয়া হয়েছে। সেই সম্পত্তি ছাড়াও কম বেশি ১৩ ডেসিমেল অর্থাৎ মোট প্রদত্ত পরিমাণ বহির্ভূত সম্পত্তি অধিকার করে রেখেছেন অমর্ত‍্য সেন। ১.৩৮ এক ডেসিমেল অর্থাৎ পুরো সম্পত্তি জাতীয় সম্পত্তি তথা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যা “পাবলিক প্রেমিসেস” এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আর এস ও এল আর ও আর রেকর্ডে “বিশ্বভারতী” স্বত্ত্বাধিকারী বা মালিক বলে উল্লিখিত।

চলতি বছরের ২৪, ২৭ জানুয়ারি এবং ৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে চিঠিতে অমর্ত‍্য সেনকে ১৩ ডেসিমেল পরিমাণ জমির জবর দখলকারী বলা হয়েছে এবং সেই পরিমাণ জমি ফেরত দেওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যুগ্ম ভাবে জমি মাপজোকের কথা বলা হয়েছে। যার কোনো উত্তর বিশ্বভারতী দেয়নি।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here