“হিন্দুদের শিক্ষা দিতে চেয়েছিলাম” স্বীকারোক্তি দিল্লির দাঙ্গার মাস্টারমাইন্ড বহিষ্কৃত আপ নেতা তাহের হোসেনের

আমাদের ভারত, ৩ আগস্ট: দিল্লি পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম জানিয়েছে, ২ আগস্ট রবিবার দিল্লি দাঙ্গায় অভিযুক্ত বহিষ্কৃত আপ কাউন্সিলর তাহের হোসেন স্বীকার করেছে, উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হওয়া দাঙ্গায় তার বড় ভূমিকা ছিল। দাঙ্গা পরিকল্পনার সে অন্যতম মাথা। সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীদের উস্কানি দিয়ে দাঙ্গা ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে ও তার হাত ছিল বলে স্বীকার করেছে তাহের হোসেন।

পুলিশ জানিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বহিষ্কৃত আপ কাউন্সিলর বলেছে, “সে হিন্দুদের একটা উচিত শিক্ষা দিতে চেয়েছিল। রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং টাকাকে হাতিয়ার করেই সে এই কাজের পরিকল্পনা করে। সে স্বীকার করেছে উত্তর পূর্ব দিল্লির দাঙ্গার অন্যতম মাথা সে।

পুলিশ আধিকারিক সূত্রে খবর, তাহের এই কাজের জন্য খালিদ সাইফি, জেএনইউ ছাত্র উমর খালিদ, ইসরাত জাহান এবং পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার সদস্য দানিশের এর সাহায্য পেয়েছে। তাহের জানিয়েছে, জম্মু–কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়া, সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরি পক্ষে রায়, সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট বিল পাশ, কেন্দ্রীয় সরকারের নেওয়া একের পর এক পদক্ষেপ তার মাথা ঘুরিয়ে দেয়। সে দাঙ্গার ছক কষে। হিন্দুদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য দিল্লিতে উমর খালিদের সঙ্গে কথা বলে। খালিদ তাকে বলেন, নিজের সম্প্রদায়ের জন্য সে তার জীবন বাজি রাখতে পারে। আবার ঠিক ওই সময়েই পিএফআই সদস্য দানিশও হিন্দু বিরোধী আন্দোলনের জন্য আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।

তারপর এই তিনজন একসাথে ঠিক করে দেশের রাজধানীতে বড় একটা কিছু করতে হবে। যার ফলে কেন্দ্র সরকার সিএএ নিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
তাহিরের কথা অনুযায়ী, খালেদ সাইফ মানুষকে উসকানোর দায়িত্ব নেয় যাতে তারা রাস্তায় হিন্দু বিরোধিতায় নেমে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটায়। সাইফ এবং তার বন্ধু ইসরাত জাহান শাহিনবাগে সিএএ বিরোধী মঞ্চে বক্তব্য রেখেছিলেন।
তাহির জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারি ৪ তারিখ সে আবার সাইফ এবং আবুল ফজলের সঙ্গে দাঙ্গার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে। সাইফ তাকে বলে, এই দাঙ্গার প্লানটি কার্যকর করা হবে যখন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ভারত সফরে আসবেন। তাহলে ভারত সরকার খানিকটা চাপে পড়বে।

তাহের জানান, দাঙ্গার জন্য চাঁদবাগে বিপুল পরিমাণে ফাঁকা বোতল, পাথরের টুকরো, জ্বালানি ছাদে জড়ো করতে বলা হয়েছিল তাকে। এছাড়াও চারটি গাড়িকে পেট্রলবোমা হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেন তিনি।

তাহের বলেছেন, উমর খালিদের পরামর্শ অনুযায়ী, অ্যাসিড, ইটের টুকরো, পাথর, পেট্রোল, ডিজেল বিপুল পরিমানে সে তার বাড়ির ছাদে জড়ো করে। এমনকি সে আগ্নেয়াস্ত্রও রেখেছিল যা পরে পুলিশের কাছে জমা পড়ে।

সে জানিয়েছে, সে তার সম্প্রদায়ের মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল তারা এই হিংসায় কোনোভাবে প্রভাবিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সে তার স্ত্রী, সন্তান সহ পরিবারের সবাইকে অন্য একটি নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাতে না থাকে অর্থাৎ প্রমাণ লোপাটের সব ব্যবস্থাই সে করেছিল। এরপর দাঙ্গার দিন তাহের নিজেই দিল্লি পুলিশকে ডেকেছিল, যাতে তার ওপর কোনো রকম সন্দেহ না হয়।

তাহেরের বলা সব কথা সঠিক কিনা তা জানতে দিল্লি পুলিশ ওমর খালিদকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *