রাজেন রায়, কলকাতা, ১৩ জানুয়ারি: করোনা পরিস্থিতিতে কে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার? হাইকোর্ট এই নিয়ে প্রশ্ন করলে রাজ্য দায় চাপিয়ে দিল কমিশনের ঘাড়ে। অন্যদিকে কমিশন বল ঠেলল রাজ্যের কোর্টে। গোটা শুনানিপর্বে এই দায় এড়ানোর চেষ্টায় ঝুলেই রইল পুরভোটের ভবিষ্যৎ।
এদিনের শুনানির শুরুতেই রাজ্যের তরফ থেকে আদালতে জানানো হয়, ৯৮ শতাংশ প্রথম এবং ৭২ শতাংশ ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ় শেষ হয়েছে ইতিমধ্যেই।
মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য এদিন আবারও অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো প্রচার করছেন প্রচুর মানুষ নিয়ে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এত লোক জড়ো হলে করোনা আরও বাড়বে। এত কিছু ব্যবস্থার পরেও প্রচুর লোক একত্রে জড়ো হচ্ছে। এই বিষয়টি এদিন আদালতে তুলে ধরেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “ভোটকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে না। এক্ট্রাঅডিনারি পরিস্থিতি। নমিনেশন দিতে গিয়েও ভিড় দেখা যাচ্ছে। যদি এই অবস্থায় কমিশন বন্ধ না করে, কোর্টের উচিত নির্বাচন বন্ধ করা।” এরপরই বিজেপির পক্ষ থেকে আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ সওয়াল করেন, এই পরিস্থিতিতে তারাও ভোট এক মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করছেন।
কমিশনের পক্ষ থেকে আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র এরপর আদালতে জানান, ভোটের দিন ঠিক করে ফেলেছে রাজ্য সরকার। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব প্রশ্ন করেন, “কমিশন কী ভাবছে এই পরিস্থিতিতে কি করা উচিত?” উত্তরে কমিশনের আইনজীবী বলেন, “এক্ষেত্রেও রাজ্যের সঙ্গে কথা বলতে হবে।” কমিশন যখন আদালতে একথা জানাচ্ছেন, তখন রাজ্যের তরফে আইনজীবী সম্রাট সেন বলেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে দিন ঘোষণা করেছে। রাজ্য তাদের মতামত জানায়। যদি ভোট পিছতে হয় তাহলে কমিশনের একমাত্র দায়িত্ব আইন প্রয়োগ করে তারা সেটা করতে পারে।”
প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “কমিশন বলছে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে এটা করা যায় না। কে সঠিক বলছেন?” উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, “এই মুহূর্তে ভোট পিছোতে কমিশন একাই পারে।” কমিশনের তরফে আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, “একবার দিন ঠিক হলে যাবতীয় দায়িত্ব কমিশনের হয়। কিন্তু সেটা নির্বাচন পরিচালনার জন্য। নির্বাচন বন্ধ করার দায়িত্ব কমিশনের নয়। একবার রাজ্য যদি দিন ঠিক করে কমিশন কি পারে সেটা বাতিল করতে? ফলে কমিশন রাজ্যের সঙ্গে একমত নয়।” সবকিছু শুনে রায়দান স্থগিত রাখে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।