আমাদের ভারত, ১৫ অক্টোবর: কাদেরকে করোনার টিকা আগে দেওয়া হবে তা নিয়ে নানা মত উঠে আসতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। বিজ্ঞানীদের একাংশ বলেছেন প্রবীণ ব্যক্তি তথা কোমর্বিডিটির রোগীদের আগে টিকা দেওয়া প্রয়োজন। আবার অন্য পক্ষের বক্তব্য শুধু বয়সের বিচারে নয় শরীর-স্বাস্থ্য, পেশা, মেলামেশার ধরণ খতিয়ে দেখে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এইরকম একাধিক মতামতের মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথান দাবি করেছেন, এই মুহূর্তে সুস্থ কমবয়সীদের টিকা না নিলেও চলবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বয়স্ক ও জরুরী পরিষেবার সাথে যুক্তদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখা উচিত।
বুধবার একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সৌম্যা বলেছেন কম বয়সী যাদের স্বাস্থ্য ভালো ক্রনিক কোন রোগ নেই তারা ২০২২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবেন। কিন্তু যারা প্রবীণ বা কোমর্বিডিটির রোগী তাদের পক্ষে এতদিন অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। তাছাড়া ডাক্তার স্বাস্থ্যকর্মী সহ যারা জরুরী পরিষেবার সঙ্গে জড়িত তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এই রোগে ক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি তাদেরই আগে টিকা দিতে হবে।
ওই ভিডিও কনফারেন্সে তিনি আরো বলেছেন টিকা ঠিক কতটা হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে একাধিক মহলে কিন্তু এখন লক্ষ্য সেটা নয়।বিশ্বের কতজনের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব সেটাই এখন আলোচ্য বিষয়। সারাবিশ্বে যদি ৭০% টিকার ডোজ নিতে পারে তাহলে সংক্রমণের হার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। কোভিডের টিকা বিশ্ববাজারে এলেও তা সকলের কাছে পৌঁছাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন টিকা যদি সমভাবে বন্টিত না হয় তাহলে করোনা মহামারী ঠেকানো সম্ভব হবে না। মাইক্রোসফটের কর্ণধার বিল গেটস এই টিকা বন্টন নিয়ে জানিয়েছেন, বিশ্বের পিছিয়ে পড়া দেশ এবং যেখানে সংক্রমণের হার বেশি,সেখানে টিকা আগে পৌঁছানো দরকার। কোন দেশ বেশি পয়সা দিচ্ছে বা কাদের ক্ষমতা বেশি তা এই ক্ষেত্রে দেখা হয়নি। নিঃস্বার্থভাবে টিকার বিতরণ হওয়া দরকার। ক্ষমতা ও রাজনৈতিক স্বার্থ দেখে নয়।
ইতিমধ্যেই টিকা বিতরণের জন্য বিশ্বের নানা দেশকে জুড়ে গ্লোবাল কমিটি বানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই কমিটির উদ্দেশ্য চাহিদা অনুযায়ী সব দেশে করোনার টিকা পৌঁছে দেওয়া। তবে যে দেশগুলোতে সংক্রমণের হার ও মৃত্যু বেশি তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই কমিটির কাজ শিখার সমবন্টনের দিকে খেয়াল রাখা। কারণ ইতিমধ্যেই টিকা বুক করতে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে। ২০২১ সালের মধ্যে ২০০ কোটি ভ্যাকসিন চলে আসবে।