ন্যূনতম মজুরির দাবিতে বড়জোড়ার কারখানার গেটে বিজেপি সমর্থিত শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৭ জুন: ন্যূনতম মজুরির দাবিতে আজ বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিজেপি সমর্থিত শ্রমিকরা। আজ সকালে কালিমাতা ভেপার লিমিটেড নামে একটি ক্ষুদ্র ইস্পাত কারখানায় শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।

বিজেপির বড়জোড়া মন্ডল-১ সভাপতি গোবিন্দ ঘোষের নেতৃত্বে তাদের অনুগামী ২৭ জন শ্রমিক কারখানার গেটের সামনে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখান। শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যূনতম মজুরি, অন্যান্য সুবিধা এমনকি সেফটি জুতো পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বলে তাদের অভিযোগ। তারা কারখানার শ্রমিক হলেও পরিচয় পত্র দেওয়া হয়নি। বি শিফট ডিউটি করে রাতে বাড়ি ফেরার সময় মাঝে মাঝেই পুলিশ তাদের কাছে কৈফিয়ৎ চায়। পরিচয়পত্র না থাকায় বিভিন্ন ঝামেলায় পড়তে হয় তাদের।

এদিন বিজেপি নেতা গোবিন্দ ঘোষ বলেন, শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি দেওয়া হয় মাত্র ২৫০ টাকা। শ্রমিকরা ন্যায্য দাবি দাওয়া নিয়ে মালিকপক্ষের লোকজনের কাছে বললেই কাজ ছাড়িয়ে দেবার হুমকি দেওয়া হয়। তিনি হুমকির সুরে বলেন, আমরা ৭ দিন অপেক্ষা করবো। কর্তৃপক্ষ যদি ন্যায্য মজুরি, পিএফ, ইএসআই, সেফটি সরঞ্জাম সহ অন্যান্য সুবিধা প্রদান না করেন তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

এদিন তার সঙ্গে এই কর্মসূচিতে ছিলেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ কর। পুলিশের মধ্যস্থতায় এদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি তুলে নেয় বিজেপি।

বিজেপির এই বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রসঙ্গে বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলক মুখার্জি বলেন, বিজেপি শ্রমিকদের নাম করে দলের কয়েক জন ব্যক্তি তোলা আদায় করতে চাইছে। তিনি প্রশ্ন করেন, শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে নিয়ে শ্রম কমিশনারের সাথে আলোচনা করে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩২৪ টাকা করা হয়েছে। মালিকরা তা মেনে নিয়েছেন। তার প্রশ্ন ওই কারখানায় তো কয়েকশো শ্রমিক কাজ করেন। শুধুমাত্র ওই ২৭ জনই কি বঞ্চিত?

মালিকরা শ্রমিকদের নানাভাবে শোষন করছে বিজেপির তোলা এই অভিযোগ মেনে নিলেও সিপিআইএম দলের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় চৌধুরী বলেন, কারা আন্দোলন করছেন? যে বিজেপি সরকার শ্রম আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নয়া শ্রম কোড তৈরি করে শ্রমিক শোষণের হাতিয়ার মালিকদের হাতে তুলে দিয়েছে। ৯০ এর দশকে বামফ্রন্ট সরকার বড়জোড়ায় শিল্পতালুক গড়ে তুলেছে বলেই বহু গরিব মানুষ কাজ পেয়েছেন। কিন্তু তৃনমূল ক্ষমতায় আসার পর তারা মাসোহারা নিয়ে ব্যস্ত। তাই এখানে শ্রমিকদের জন্য একমাত্র সিআইটিইউ লড়াই করছে বলে তিনি দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *