রথের দিন যাত্রার বায়না শুরু হলেও এবছর বায়না কতটা হবে সেই নিয়ে দোলাচলে যাত্রাপাড়া

আমাদের ভারত, পূর্বমেদিনীপুর, ২২ জুন: রথযাত্রার দিন যাত্রার বায়না শুরু হয় প্রতিবছর। করোনার জন্য লকডাউনের ফলে এ বছর এখন সবকিছুই অনিশ্চিত। ফলে বুঝে উঠতে পারছেন না কি করবেন যাত্রা শিল্পী থেকে বুকিং এজেন্ট এবং মালিক সবাই।

পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে বেশ কয়েকটি যাত্রাপালা বুকিংয়ের সেন্টার আছে। প্রতিবছরই এইসব কাউন্টার গুলি থেকে যাত্রাপালার বায়না শুরু হয় রথযাত্রার দিন। পোস্টার-ব্যানার সমস্ত কিছু নিয়েই রেডি থাকেন বুকিং এজেন্টরা। রীতিমতো অফিস সাজিয়ে বসে থাকেন বুকিংয়ের জন্য। এই দিনটিতে বুকিং করলে বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়। ফলে অনেক মানুষ আসেন এই বিশেষ দিনটিতে যাত্রার বায়না করতে। যার ফলে জমজমাট থাকে এলাকা। প্রচণ্ড ব্যস্ততায় দিন কাটে বুকিং কাউন্টার গুলির। যাত্রাপালার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকে অপেক্ষা করে থাকেন এই দিনটির জন্য।

এবছর চিত্রটা একটু অন্যরকম। করোনার জন্য লকডাউনের কারণে এখনো অনুমতি মেলেনি যাত্রাপালা করার। কবে এই নিষেধাজ্ঞা উঠছে তাও বুঝে উঠতে পারছেন না। যাত্রার মরশুম সাধারণত শুরু হয় বর্ষার পর আগস্টের মাঝামাঝি থেকে। সেইমতো বুকিং নেওয়া হয়। এবছর আগস্ট মাসে কোনও বুকিং নেওয়া যাবে না। অক্টোবরে দুর্গাপূজার সময় থেকে বুকিং নেওয়া শুরু করলেও সরকারি নির্দেশে কোনো কারণে যদি সেই সময় যাত্রা না করা যায় তাহলে বায়না বাতিল হবে।

নন্দকুমারের যাত্রার বুকিং এজেন্ট মান্তু অধিকারী জানান, বুকিং এজেন্ট বা পরিচালক থেকে শুরু করে যাত্রা শিল্পী ও মালিক সবাই একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের উপর ঝুলে আছে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের কুড়ি হাজার মানুষ এখন বিরাট সমস্যার সম্মুখীন। আগামীকাল থেকে বায়না শুরু হলেও মানুষজন কতটা আসবেন সেটা নিয়েই এখনো দোলাচলে বুকিং এজেন্টরা। যাত্রা দলের মালিকরা বহু টাকা ব্যয় করে শিল্পী বুকিং করেন মরসুমের শুরুতে। তারাও চাইছেন শুরু হোক যাত্রা না হলে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে তাদেরকে। তারা চাইছেন সরকার অনুমতি দিক। দেরিতে শুরু হলেও দুর্গাপুজো, কালীপুজো, বড় পুজোগুলোর যদি অনুমতি না পায় তাহলে তাদের যাত্রা হবে না সেই সময়। অনাহারে মরতে হবে অনেককেই।

তাম্রলিপ্ত যাত্রা কল্যাণ সমিতির সম্পাদক শেক জাহাঙ্গীর জানালেন, তারা সরকারের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। যাতে শিল্পীরা বা দলের মালিকরা রিহার্সাল শুরু করতে পারেন নিশ্চিন্ত মনে। সরকার যাত্রাশিল্পের সঙ্গে জড়িতদের দিকে তাকিয়ে একটা নির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। যাতে আগামী মরশুমে অন্তত যাত্রাটা ঠিকঠাকভাবে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *