৮৪৩ টাকার গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ তে, উজ্জ্বলা প্রকল্প নিয়ে রমরমা দালালচক্র তপনে

আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ১৩ এপ্রিল: উজ্জ্বলা প্রকল্প নিয়ে রমরমা দালালচক্র তপনে। ঘরবন্দি দুস্থ মানুষদের পকেট কাটার অভিযোগ সাব ডিলারদের বিরুদ্ধে। ৮৪৩ টাকার গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। চলছে বুকিং ও লিঙ্ক জুড়তেও তোলাবাজি। লকডাউনে ঘরবন্দি, সাধারণ, গরিব মানুষদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে সাবডিলারদের রমরমা দালালচক্র সক্রিয় হয়েও উঠেছে তপনে। অভিযুক্তদের লাইসেন্স বাতিলের দাবি তুলে সরব এলাকার বাসিন্দারা।
রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের আজমতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপিনাথপুর এলাকার এমন ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। লাইসেন্স বাতিল করে দেবার হুশিয়ারি সাংসদেরও।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে উজ্জ্বলা প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে তিনটি করে গ্যাস দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই গরিব মানুষদের পকেট কাটতে মাঠে নেমে পড়েছে কিছু সাবডিলার বলে অভিযোগ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গ্যাস বুকিং করার পরেই গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা সরাসরি চলে যাচ্ছে। গ্যাস ডেলিভারি দেওয়ার সময় সেখান থেকেই ৮৪৩ টাকা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে গ্রাহকদের। অভিযোগ, গ্রামের মানুষদের সরলতার সুযোগ নিয়ে গ্যাসের বই জমা নিয়ে প্রথমে বুকিংয়ের জন্য ৪০ টাকা এবং পরে ব্যাঙ্ক লিঙ্কিং সমস্যার জন্য আরও ৭০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গ্যাস ডেলিভারি দেওয়ার সময় ৮৪৩ টাকা নেবার কথা থাকলেও, কারও কাছে ৮৯০, কারও কাছে ১০০০ আবার কারো কাছে ১১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা অভিযুক্ত ওই সাব ডিলারদের লাইসেন্স বাতিলের দাবিতে সরব হয়েছেন। তপনের গোপীনাথপুর এলাকার সাব ডিলার বাপি বর্মন ও গৌতম সূত্রধরের বিরুদ্ধেই এমন অবৈধ ভাবে টাকা তোলার অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা।

বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে এক সাব ডিলার গৌতম সূত্রধর জানিয়েছেন, ফর্ম ফিলাপ এবং বুকিংয়ের জন্য তিনি কোনও টাকা নিচ্ছেন না। তবে গ্যাস বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাড়তি কিছু টাকা নেওয়া হচ্ছে।

উপভোক্তা স্বপন বর্মন, বিজয় রায়, টুম্পা রায় এবং পূর্ণিমা রায়রা জানিয়েছেন, বিপদের দিনে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের পাশে দাঁড়ালেও গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটররা তাঁদের কাছে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন। না দিলে গ্যাস দেবেন না বলেও হুশিয়ারি দিচ্ছেন। অভিযুক্তদের লাইসেন্স বাতিল করে দোকান সিল করে দেওয়া উচিত প্রশাসনের।

কেন্দ্রীয় সাহায্যের সাথে এমন দুর্নীতি কখনই বরদাস্ত নয়, জানিয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সাথে কথা বলে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

যদিও বিষয়টি নিয়ে বালুরঘাটের মহকুমা শাসক বিশ্বরঞ্জন মুখার্জি জানিয়েছেন, অভিযোগ সত্যি হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *