আমাদের ভারত, ১৬ অক্টোবর: বাংলাদেশের নোয়াখালি দাঙ্গা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তথাগত রায়ের একটি পোস্টে বিপুল সমর্থন আসছে।
১৯৪৬-এর অক্টোবর মাসে নোয়াখালিতে পাঁচ হাজার লোক মারা যান, বিপন্ন হন অর্ধলক্ষাধিক লোক। ১৮ অক্টোবর যুগান্তর পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় সেটি ছিল শীর্ষ সংবাদ। সেই ছবি দিয়ে তথাগতবাবু লিখেছেন, “যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না তাদের বিলুপ্ত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা.. আজকের নোয়াখালী দেখিয়ে দিচ্ছে আমরা ১৯৪৬-এর নোয়াখালী থেকে কোনও শিক্ষাই নিইনি…। অন্ধের শহরে আয়না বিতরণ করার প্রয়াস চলতে থাকুক…।” পোস্ট করার পর প্রথম এক ঘন্টায় ৬২টি মন্তব্য এসেছে এতে। প্রায় সবেতেই মিলেছে সমর্থন।
শুভ্রজিৎ দালাল লিখেছেন, “বাংলাদেশে, হচ্ছেটা কি? রামকৃষ্ণ মিশন ও রামকৃষ্ণ আশ্রম হাজিগঞ্জ, চাঁদপুর, ইসকন নোয়াখালী, শ্রীশ্রী রাম ঠাকুরের সমাধি স্থল- কৈবল্যধাম, চৌমুহনী, নোয়াখালী, কুমিল্লার অগনিত পূজামণ্ডপ, রাজশাহী, খুলনা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্দির ও পূজা মন্ডপ ভাঙ্গা হচ্ছে। ধংস করে দেওয়া হচ্ছে হিন্দুদের বাড়িঘর। হত্যা করা হচ্ছে মন্দিরের পুরোহিত, ভক্তদের। লুটপাট করা হচ্ছে মন্দির ও হিন্দুদের ধনসম্পদ। ধর্ষিতা হচ্ছেন আমাদের ঘরের মা বোনেরা।
রামকৃষ্ণ মঠ, ইসকন কৈবল্যধাম – এগুলো হল আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আমি অবাক হয়ে গিয়েছি, এখনও পর্যন্ত শ্রীরামকৃষ্ণ সংঘের কোনও ভক্ত একটিবারও প্রতিবাদ করল না। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের চতুর্থতম সঙ্ঘগুরু পূজ্যপাদ শুদ্ধানন্দজী মহারাজ বলতেন, “আমরা সব রামকৃষ্ণের চ্যালা, বুক ফুলিয়ে বলা, শুধু ভান্ডারা খাবার বেলা।” এই কথাটি বর্তমান সময়ের জন্য সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। এই সমগ্র বিশ্বে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের শত সহস্র সদস্য, মন্ত্রশিষ্য ও শুভানুধ্যায়ী আছেন। তাঁদের মাঝে থেকে গুটিকয়েক ভক্তই শুধুমাত্র প্রতিবাদ করেছেন। যাঁরা নিজের গুরুস্থানের অপমান সত্ত্বেও মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন, তাঁদের আর কিছু বলার নেই।
এই বছরের প্রথম দিকে কলকাতার উদ্বোধন কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ নিয়ে মিথ্যা রটনায় পূজ্যপাদ সোমেশ্বরানন্দজী তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু দুর্গা পূজার পুষ্পাঞ্জলির সময় কিংবা আশ্রমের কোনও অনুষ্ঠানের সময় যত ভক্ত দেখা যায় তার অর্ধেক ভক্তও যদি প্রতিবাদ করত তাহলে আজ প্রশাসন নড়েচড়ে বসত। আমি জানি এই কথাগুলো আপনাদের অনেকেরই ভালো লাগবে না।
কিছু ভুল বলে থাকলে ক্ষমা করবেন। পরিশেষে সবার কাছে এটাই প্রার্থনা, প্রত্যেক ভক্ত নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করুন। সন্ন্যাসীরা জগতের সকলের প্রতি সমান দৃষ্টি পোষণ করেন। তাই বলে আন্যায় অধর্মের প্রতিবাদ করবেন না? এটিই কি সন্ন্যাসের মহান ধর্ম?
কিন্তু আমরা যাঁরা গৃহস্থ ভক্তরা রয়েছি, আমাদের তো নিজ গুরুস্থানের প্রতি কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। দয়া করে সেই মহাকর্তব্য কর্ম পালন করুন। ছোট মুখে বড় কথা বলার জন্য অপরাধ মার্জনীয়।
এভাবে প্রতিমুহূর্তে কোরান, ইসলাম, আল্লাহ, নবীর অবমাননার ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে বাঙালি ও পাকিস্তানের হিন্দুরা বাঁচবেন কি করে? যে কোনও অছিলায় ওরা হিন্দুদের উপর নানারকম কায়দায় নৃশংস আক্রমণ চালাতে প্রস্তুত হয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও পরাশক্তির দেশগুলির কাছে আকুল আবেদন, “আপনারা সনাতন হিন্দু জাতিকে আরবের বর্বরতার হাত থেকে রক্ষা করুন।” ইতি -রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের অতি নগন্য একজন সেবক।”
গৌতম বসাক লিখেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকারকে বলুন অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আপনারাই পারবেন। সমস্ত হিন্দুদের এপার বাংলায় আর সমস্ত অপর ধর্মীয়দের ওপার বাংলায়।“ প্রসেনজিৎ বৈদ্য লিখেছেন, “রাজনৈতিক কারণে কিছু দল সত্য ইতিহাস ধামাচাপা দিয়ে রাখতে চায়।“
প্রসূণ তালুকদার লিখেছেন, “চট্টগ্রামের বাঁশখালী আমার বাড়ি। একদম থানার গেটে কালীবাড়িতে হামলার সময় আমি স্পটেই ছিলাম। হামলাকারীদের শ্লোগান ছিল “মূর্তি পুজা শিরক, মানি না মানব না।” বছরজুড়ে এই শিক্ষা যারা/ যে জিনিস দেয় আগে তার সংস্কার দরকার।“ বর্ণালী মজুমদার লিখেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকারকে বলুন এর প্রতিবাদ জানাতে। দেশের জনগণ তো ওঁর সাথেই আছে।“