
আমাদের ভারত, বীরভূম, ২১ ফেব্রুয়ারি: আদিবাসী গ্রামে আজ শিবের মাথায় জল ঢাললেন কয়েক হাজার পূণ্যার্থী। ভক্তদের দেওয়া হল ফলমূল এবং দেবাদিদেব মহাদেবের ছবি।
বীরভূম জেলার রামপুরহাট বিধানসভা এলাকার ভাটিনা গ্ৰাম। সম্পূর্ণ আদিবাসী অধ্যুষিত গ্ৰাম। আজ এই গ্রামেই ভক্তিপূর্ণভাবে মহাদেবের পুজো করলেন আশেপাশের কয়েক হাজার মানুষ। শিবচতুর্দশী উপলক্ষে মেলাও বসেছে গ্রামে। অথচ কয়েক বছর আগে এই চিত্র দেখা যেত না এই গ্রামে। ধর্মান্তকরণের জন্য গ্রামের জনবিন্যাস পালটে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে পালটে গিয়েছিল ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। কারণ, একসময় বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে বহু গ্রামবাসীকে খ্রিষ্ঠান ধর্মে ধর্মান্তরিত করানো হয়েছিল। পরে আবার সকলে স্বধর্মে ফিরে আসেন। গর্বের সাথে নিজেদের হিন্দু পরিচয় ঘোষণা করেন।
এই গ্রামের ধর্মান্তরিত আদিবাসীদের স্বধর্মে ফিরিয়ে আনার কাজটি করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ২০১৪ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আদিবাসীদের খ্রিস্টান থেকে হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনে। সেই পরাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তৎকালীন সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়া। তখনই ওই গ্রামে শিব ঠাকুরের মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। মন্দিরের নাম দেওয়া হয়েছিল সিংহ বাহিনী। তারপর থেকে প্রতি বছর শিবরাত্রির দিন ওই মন্দিরে মেলা বসে। প্রতিবছর ৩০০০ থেকে ৪০০০ আদিবাসী হিন্দুর সমাগম হয়। সকলে পুজো দেন, জল ঢালেন।
এবারও সেই ধারা মেনে শিবরাত্রি পালিত হচ্ছে। মেলাও বসেছে। আজ শতাধিক পুণ্যার্থীকে বাড়ির দেওয়ালে টাঙানোর জন্য দেবাদিদেব মহাদেবের বাঁধানো ছবি দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে জল ঢালবার পরে কিছু মুখে দিয়ে উপবাস ভাঙার জন্য সকলের হাতে কিছু ফল তুলে দেওয়া হয়। এই আর্থিক ভার সম্পূর্ণ বহন করেছেন রাজা ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর বক্তব্য, এই আদিবাসীরাই তো হিন্দু সমাজের মূল ধারার বাহক।