বীরভূমের খয়রাশোলে তৃণমূল কর্মী খুন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ

আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ৪ জুলাই: সারা রাত নিখোঁজ থাকার পর ভোরের দিকে উদ্ধার হল এক তৃণমূল কর্মীর রক্তাক্ত মৃতদেহ। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ওই তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। তার কানের কাছে বড় ক্ষত রয়েছে। এই খুন নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়ে গিয়েছে।

মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম শিশির বাউরি (৪৫)। বাড়ি বীরভূমের খয়রাশোল থানার পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আমাজোলা গ্রামে। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তাকে পিকনিকের নাম করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কিশোর মণ্ডল। তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের লোকজন রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশিরের সন্ধান পায়নি। শনিবার ভোরের দিকে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে রানিপাথর গ্রামের শেষ প্রান্তে বটগাছের নিচে তার রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার মানুষ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।

মৃত তৃণমূল কর্মীর স্ত্রী বুলু বাউরির অভিযোগ, তৃণমূল নেতারাই তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। বুলু বাউরি বলেন, “গ্রামে একটি রাস্তা ঢালাই চলছিল। সেই কারণে পিকনিক আছে বলে স্বামীকে ডেকে নিয়ে যায় কিশোর মণ্ডল। রাতে বাড়ি ফিরছে না দেখে রাস্তার কাজের এলাকায় গেলে কিশোর বলে স্বামী বাড়ি চলে গিয়েছে। এরপর অনেক খুঁজেও সন্ধান পাইনি। আজ সকালে এলাকার মানুষ স্বামীর মৃত্যু সংবাদ দেয়। আমার স্বামীকে গুলি করে মেরেছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই স্বামীকে খুন করেছে”।

যদিও তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “শিশির আমাদের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। বিরোধীরা তাকে খুন করে এলাকার সংগঠনকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে”।

বিজেপির জেলা সম্পাদক অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে ওই ব্যক্তি খুন হয়েছে। তাছাড়া এলাকার অবৈধ বালি কারবার নিয়ে দলের মধ্যে কোন্দল ছিল। সেই কারণে তাকে খুন করা হতে পারে। তবে খুনের সঙ্গে বিজেপি কোনও ভাবে যুক্ত ছিল না”।

মৃত শিশিরের স্ত্রী বুলু বাউরি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কিশোর মণ্ডল সহ মোট সাত জন তৃণমূল নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পরিবারের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের কারণেই খুন করা হয়েছে তাকে”। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *