
সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৪ ফেব্রুয়ারি: দলছুট এক হাতিকে বাগে আনতে অবশেষে ঘুমপাড়ানি গুলি করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল বাঁকুড়া ও বর্ধমান বন দপ্তর। গতকাল মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনই হাতির আক্রমণে উত্তরবঙ্গের হাতি উপদ্রুত জলপাইগুড়িতে এক পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর খবরে গোটা রাজ্য তোলপাড় হয়ে পড়ে।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া হাতি উপদ্রুত হওয়ায় পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করায় প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ হলেও বৃহস্পতিবার রাতে সোনামুখীর জঙ্গলে থাকা একটি হাতি দলছুট হয়ে দামোদর পেরিয়ে পূর্ব বর্ধমানের পানাগড় শিল্পাঞ্চল লাগোয়া কসবার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে হুলস্থুল কান্ড বাধিয়ে দেয়। শিল্পাঞ্চলের জনবহুল রাস্তায় যদি হাতিটি ঢুকে পড়ে এবং হাতিটিকে বাগে আনা সম্ভব না হয় তাহলে কি ঘটতে পারে সেই আশঙ্কায় ঘুম ছুটে যায় বাঁকুড়া জেলা বন কর্তাদের।
বৃহস্পতিবার রাতেই বাঁকুড়া উত্তর ও দক্ষিণ এবং পাঞ্চেত বন বিভাগের কর্তারা যৌথ ভাবে যোগাযোগ করেন পূর্ব বর্ধমানের বন কর্তাদের সঙ্গে। যোগাযোগ করা হয় রাজ্য বন মন্ত্রকের সঙ্গেও। রাতেই বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় বন বাংলোয় এসে পৌঁছান বন মন্ত্রকের চিফ কনসারভেটিভ অব্ ফরেষ্ট এস কুনাল ডাইভাল। জলপাইগুড়ির ঘটনার পর খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত ওই ঘটনার পর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপর হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে বাগে আনার নির্দেশ পান বাঁকুড়ার বন দফতর। সেই মত এক্সপার্ট আনা হলে আজ শুক্রবার সাত সকালেই দুই জেলার বন দফতরের কর্তারা হাতিটির গতিবিধির উপর নজর রেখে হাতির অবস্থান চিহ্নিত করে এদিন হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে কাবু করা হয়। এরপর হাতিটিকে ট্রাকে চাপিয়ে আনা হয় বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় রেঞ্জ অফিসে।
চিফ কনজারভেটিভ অব্ ফরেষ্ট এস কুনাল ডাইভাল বলেন, হাতিটি দলছুট হয়ে সোনামুখীর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে দামোদর পার হয়ে পূর্ব বর্ধমানের কসবার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। দুই জেলার যৌথ উদ্যোগে হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে ধরা হয়। হাতিটি পুরোপুরি সুস্থ আছে। কিন্তু এখনই জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতে পারে। তাতে হিতে বিপরীত ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই হাতিটির ঘোর কাটার পর ঝাড়গ্রামের গভীর জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।