অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, ১৫ সেপ্টেম্বর : স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে নানা আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু কেই বা মনে রেখেছেন, দেশ স্বাধীন সওয়ার ঢের আগে ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন শুরু হবার পরেই এইচ বোসেস রেকর্ডের আত্মপ্রকাশ। বন্দেমাতরম গান সহ শুধু দেশাত্মবোধক গানই এতে প্রচার করা হয়েছিল। সেই গান অনেকটাই উদ্দীপিত করেছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের।
এইচ বোস মানে হেমেন্দ্রমোহন বসু (জন্ম: ১৮৬৪ – মৃত্যু: ২৮ আগস্ট ১৯১৬) ছিলেন উদ্যোগপতি। জন্ম মতান্তরে ১৮৬৬তে, ময়মনসিংহের জয়সিদ্ধিতে। তাঁর পিতার নাম হরমোহন। কাকা হলেন ব্রাহ্ম সমাজের নেতা আনন্দমোহন বসু। তাঁর স্ত্রী মৃণালিনী হলেন প্রবাদপ্রতিম শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছোটবোন। হেমেন্দ্রমোহনের ১০ পুত্রকন্যাদের ভিতরে চিত্রপরিচলক নীতীন বসু, ক্রিকেটার কার্তিক বসু এবং সঙ্গীত শিল্পী মালতী ঘোষাল খ্যাতিলাভ করেছিলেন।
ছবি: আনন্দমোহন বসু, হেমেন্দ্রমোহনের কাকা।
স্বদেশী গান প্রচারের জন্য হেমেন্দ্রকুমার তাঁর প্রধান শিল্পী হিসাবে পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়কে। তাঁর তৈরি রেকর্ডে লালচাঁদ বড়াল বহু গান গেয়েছিলেন। তিনি মূলত সুগন্ধীদ্রব্য, সাইকেল, মোটর গাড়ি, রেকর্ড, টর্চ লাইট এবং ছাপাখানার ব্যবসা করেছিলেন। তিনি শিল্পে বাঙালির কর্মক্ষেত্র তৈরি করেন এবং বহু বিষয়ে নিজস্ব ধারার প্রবর্তন করেন। তিনি বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিস্ময়কর যান্ত্রিক প্রগতির বিভিন্ন নিদর্শনকে এদেশ প্রবর্তন করেন।
হেমেন্দ্রমোহন আইএ পাস করার পর মেডিকেল কলেজে পড়তে থাকেন। সেই সময় তাঁর চোখে অ্যাসিড ছিটকে পড়ায় কিছুদিন অসুস্থ থাকেন। এর পর পড়া ছেড়ে ১৮৯০-৯১ খ্রিষ্টাব্দে কুন্তলীন কেশ তৈল নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। এইচ বোস পারফিউম কারখানা থেকে তৈরি হতে থাকে কুন্তলীন, দেলখোস, ল্যাভেণ্ডার ওয়াটার, ও-ডি কোলন, মিল্ক অফ রোজ প্রভৃতি সুগন্ধি দ্রব্য। তাঁর তৈরি ‘কুন্তলীন তেল’ পূর্বভারতে দীর্ঘকাল রাজত্ব করেছিল এবং তিনি কলকাতার ৬, শিবনারায়ণ দাস লেনে দ্বিতীয় একটি কারখানাও খোলেন। ১৮৯৪ সালে ‘দেলখোস’ নাম দিয়ে সুগন্ধী দ্রব্য তৈরির ব্যবসা শুরু করেন তিনি। সকালের দাঁতের মাজন থেকে শুরু করে সারাদিনের ব্যবহার্য নানা দ্রব্যের সুলুক সন্ধান পাওয়া যেত তাঁর কাছে।
বাঙালিদের মধ্যে তিনিই প্রথম কলকাতার হ্যারিসন রোডে সাইকেলের দোকান খোলেন। তিনি নিজে সাইকেল চড়তেন এবং বন্ধু বান্ধবদের চড়তে শেখাতেন। ইংল্যান্ডে তৈরি রোভার সাইকেল আর ডারকাপ সাইকেলের এক মাত্র এজেন্সি নিয়েছিলেন হেমেন্দ্রমোহন। দোকানে বিক্রির পাশাপাশি সাইকেলে চড়তে শেখার পাঠও তিনি দিতেন। জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায় থেকে শুরু করে নীলরতন সরকারকে তিনিই সাইকেল চড়া শিখিয়েছিলেন৷
সেই সময়ে বিদেশ থেকে শুধু মোটর গাড়ি নয় তার চালকও আনতে হত। সেই সময়ে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে হেমেন্দ্রমোহন তাঁর টু-সিটার ড্যাকার গাড়িটি নিজে চালাতেন। তিনি গ্রেট ইষ্টার্ন মোটর কোম্পানি তৈরি করেন। পার্ক স্ট্রিটে গ্রেট ইষ্টার্ন মোটর ওয়ার্কস নামে তাঁর একটি মেরামতির কারখানাও ছিল। ব্যবসার জন্য স্টোনলে সিডলে ডেজি, অস্টিন আর ল্যান্ডলেট গাড়ির এজেন্সি নিয়েছিলেন। সেই সময়ে সাহেবদের পাশাপাশি বাঙালিরাও মোটরগাড়ি কেনার দিক থেকে পিছিয়ে ছিল না৷ তবে এই ব্যবসা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মন্দার বাজারে ১৯২০ সাল নাগাদ মোটরগাড়ির ব্যবসা বন্ধ করে দেন হেমেন্দ্রমোহন।
এরপর ধর্মতলার মার্বেল হাউসে ‘দ্য টকিং মেশিন হল’ নামে হেমেন্দ্রকুমার এদেশে প্রথম রেকর্ড তৈরির কারখানা খোলেন। তাঁর হাত ধরেই বাংলা পেল গ্রামোফোন৷ হেমেন্দ্রকুমার এদেশে প্রথম রেকর্ড তৈরির কারখানা খুলেছিলেন। এই রেকর্ড ছিল ফনোগ্রামের সিলিন্ডার। ধর্মতলার মার্বেল হাউসে দ্য টকিং মেশিন হল নামে এই কারখানা তিনি খোলেন। পরে বৌবাজার স্ট্রিটের দেলখোস হাউসে এই কারখানা স্থানন্তরিত হয়। ‘দ্য টকিং মেশিন হল’ – এ মেরামতি বিভাগও চালু করেছিলেন। প্যাথে ডিস্কে এইচ. বোসেস রেকর্ডসের প্রথম চালান কলকাতায় আসে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে।
হেমেন্দ্রকুমার সম্পর্কে বারিদবরণ ঘোষ লিখছেন, “যন্ত্র আর রেকর্ডের ব্যবসামাত্র নয়, রেকর্ড তৈরি করা পর্যন্ত। কি বিস্ময়কর প্রতিভা আর অত্যাশ্চর্য উদ্যোগ! সিলিন্ডার রেকর্ডকে আবার প্যারিসের বিখ্যাত চার্লস প্যাথি কোম্পানি থেকে ডিস্ক রেকর্ডে পরিণত করিয়ে ভারতবর্ষে তিনিই প্রথম ‘প্যাথেফোন’ যন্ত্রের প্রবর্তন করলেন।” এ কথা জানিয়ে ‘সববাংলায়’ লিখেছে, “এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সুরেন্দ্রনাথ মৈত্র, প্রমদারঞ্জন রায়, লালচাঁদ বড়াল থেকে শুরু করে উস্তাদ রমজান খান, পিয়ারা সাহেব, মানদাসুন্দরী দেবী, নরীসুন্দরী, কাশীবাবু, পূর্ণ কুমারী, মহম্মদ হুসেন, দেবেন বন্দ্যোপাধ্যায়, এস সি সমাজপতি, জি জি গুপ্ত, নীরোদা বাঈ–কে না এসেছিলেন ধর্মতলার মার্বেল হাউসে৷
হেমেন্দ্রমোহন বসুর প্যাথে-তে রবীন্দ্রনাথের রেকর্ডিংয়ের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল একুশেরও বেশি। ‘লুকোচুরি’, ‘বুক বেঁধে তুই দাঁড়া দেখি’, ‘যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক’, ‘অয়ি ভুবন মনমোহিনী’, ‘বন্দেমাতরম’ তার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু বঙ্গভঙ্গের ঢেউ এসে এই ব্যবসাও ডুবে গেল। একসময় যেটুকু বাকী ছিল শহরে প্লেগ এসে তাও শেষ করে দিয়ে গেল। পাশাপাশি বাজারে ডিস্ক আসায় তাঁর ব্যবসা আর চলল না।“
হেমেন্দ্রকুমার প্রতিষ্ঠিত কুন্তলীন প্রেসেরও খুব সুনাম ছিল। তিনি নিজে দক্ষ আলোকচিত্রী ছিলেন। রঙিন আলোকচিত্র গ্রহণে তিনি এদেশে পথিকৃৎ। তাঁর তোলা কয়েকটি অটোক্রোম স্লাইড পাওয়া যায়।
হেমেন্দ্রমোহন কুন্তলীন ও দেলখোসের প্রচার এবং সাহিত্যসৃষ্টিকে উৎসাহ দেবার জন্য ১৩০৩ বঙ্গাব্দে কুন্তলীন পুরস্কার প্রবর্তন করেন এবং অনেক সাহিত্যিককে নিজের প্রতিভা বিকাশে সুযোগ দেন।
শিল্পে বাঙালির কর্মক্ষেত্র প্রস্তুতেও অন্যান্য স্বকীয় ধারায় অসামান্য দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। মূলতঃ উল্লিখিত খাদ্যসামগ্রীর প্রচারের উদ্দেশ্যে হলেও বাঙালির সাহিত্যসৃষ্টিকে উৎসাহ দেওয়ার জন্যই ১৩০৩ বঙ্গাব্দে (ইংরাজি ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে) চালু করে অনেক সাহিত্যিককে নিজেদের প্রতিভা বিকাশের প্রথম সুযোগ দেন তিনি। সহায়তায় ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় হেমেন্দ্রমোহন বসুর এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলেছিলেন, “তেলে-জলে কখনও মেশে না, কিন্তু তবুও একথা মানতেই হয় যে, অন্তত একটি তেল আমাদের সাহিত্যরূপ জলের সঙ্গে নিতান্ত নিগূঢ় ভাবেই মিশে আছে। সেটি কুন্তলীন।”
বিজ্ঞাপন মূল উদ্দেশ্য হলেও পুরস্কার প্রতিযোগিতায় শর্ত থাকত – “গল্পের সৌন্দর্য কিছুমাত্র নষ্ট না করিয়া কৌশলে ‘কুন্তলীন’ এবং এসেন্স ‘দেলখোস’ এর অবতারণা করিতে হইবে, অথচ কোনো প্রকারে ইহাদের বিজ্ঞাপন বিবেচিত না হয়।”
কুন্তলীন পুরস্কার পুস্তিকার জন্য রবীন্দ্রনাথ ‘কর্মফল’ গল্পটি লিখে সাম্মানিক পেয়েছিলেন ৩০০ টাকা। কুন্তলীন পুরস্কারের জন্য ১০০ টাকা বরাদ্দ ছিল। প্রথম স্থানাধিকারী পেতেন ১০০ টাকা। তবে স্থানাধিকারী বেশি হলে- এ ভাবে ২, ২০, ১, ১০ এবং পঞ্চম থেকে দশম স্থানাধিকারীকে টাকা দেওয়া হত। প্রথম বর্ষের ১৩০৩ বঙ্গাব্দের প্রথম ‘কুন্তলীন পুরস্কার’ পেল ‘নিরুদ্দেশের কাহিনি’ নামের গল্প। প্রথমে লেখকের নাম প্রকাশ করা হয়নি। পরে অবশ্য জানা যায়, সেই গল্প লিখেছিলেন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।
গল্প লিখে ‘কুন্তলীন পুরস্কার’ পাওয়া তখন খুব সম্মানের ব্যাপার ছিল। কেননা বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশনা সংস্থা পুরস্কার প্রাপকদের সমীহ করতেন। ১৯০৩ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘মন্দির’ এই পুরস্কার লাভ করেছিল। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পুরস্কার প্রাপকেরা হলেন – ১) মানকুমারী বসু (১৩০৩ব.- ‘রাজলক্ষ্মী’), ২) যোগীন্দ্রনাথ সরকার (১৩০৩ব.- ‘মনে পড়ে’ কবিতা) ৩) প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় (রাধামণি দেবী ছদ্মনামে) (১৩০৪ব. – ‘পূজার চিঠি’), ৪) মানকুমারী বসু ( ১৩০৫ব. – ‘অদৃষ্টচক্র’), ৫) মানকুমারী বসু (১৩০৬ব. – ‘শোভা’), ৬) অনুরূপা দেবী (তিনি ‘রাণী দেবী’ ছদ্মনামে গল্প লিখে কুন্তলীন পুরস্কার জিতে নেন), ৭) হরকুমারী সেন (১৩০৫ব. – ‘জামাইবেটার উপাখ্যান’), ৮) বারীন্দ্রকুমার ঘোষ (১৩০৮ব.’পরিণয় রহস্য’, ১৩০৯ ব.’উদোরপিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে’), ৯) সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় (১৩০৯ব,১৩১০,১৩১১ব)।
এখনকার ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’, ‘সাহিত্য অকাডেমি পুরস্কার’ এবং অন্যান্য সাহিত্য পুরস্কার তৎকালীন ‘কুন্তলীন পুরস্কার’ থেকেই অনুপ্রাণিত। সর্বশেষ কুন্তলীন পুরস্কার ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ (ইংরাজি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ) ঐতিহ্য বজায় রাখতে প্রকাশ করা হয়েছিল।
কমবেশি তাঁর অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলেও সুগন্ধির ব্যবসা কখনও তাঁকে হতাশ করেনি। তিনি সুগন্ধির ব্যবসার ক্ষেত্রে তৈরি করেছিলেন নিজস্ব খাঁটি বাঙালি ব্র্যান্ড। সুবাসিত, পদ্মগন্ধ, গোলাপ, যুঁই, চন্দন, বোকে, ভায়োলেট কুন্তলীন – এই সাত রকমের চুলের তেল ছাড়াও নানা সুগন্ধি পাওয়া যেত৷
হেমেন্দ্রমোহন খেলাধুলাতেও উৎসাহী ছিলেন। স্পোর্টিং ইউনিয়ন ক্লাবের তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তার ২ নং আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাড়িতে বহু জ্ঞানীগুনীর আসাযাওয়া ছিল।
‘সববাংলায়’ জানিয়েছে, “হেমেন্দ্রমোহনের ঝোঁক শুরু হয় ছবি তোলার দিকে। ছবির প্রতি ভালোবাসা হেমেন্দ্রমোহনের এতটাই বেশি ছিল যে তিনি বিদেশ থেকে কেবল একাধিক ক্যামেরা আনিয়েই ক্ষান্ত হননি, নিজের বাড়িতেই তৈরি ডার্করুম প্রথম শুরু হয়েছিল। ছবিতে ‘থ্রি ডায়মেনশন’ বা ত্রিমাত্রিক ভাবনাও প্রথম তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। ১৯০৫ থেকে ১৯০৬ সাল নাগাদ তাঁর তোলা স্ত্রী মৃণালিনীদেবীর একটি ছবি এখনও দেখতে পাওয়া যায় যে ছবিতে মৃণালিনী দেবীর শাড়ির আঁচলে লাগানো ছিল একটি ব্রোচ তাতে জ্বলজ্বল করছে ‘বন্দেমাতরম’ শব্দটি। রঙিন ফিল্মের পাশাপাশি মুভি ক্যামেরাও বিদেশ থেকে তিনি আনিয়েছিলেন। গ্রুপ ফটোর পাশাপাশি পোর্ট্রেটেও ছিল হেমেন্দ্রমোহনের দক্ষতা। চৌকোনা পকেট টর্চ লাইটও এ দেশে এসেছে তাঁরই হাত ধরেই বাংলায় প্রচলন হয়।
হেমেন্দ্রমোহন বসু কেবলমাত্র ব্যবসার জন্য নানারকম জিনিস প্রস্তুত করেই তিনি ক্ষান্ত থাকেননি। ঠিকমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে, নিজের প্রচার করে ব্যবসা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
শিকড়ের টানে ময়মনসিংহের প্রাক্তনীরা
নিয়মিত পান ও বিদেশি ক্যাডবেরি খাওয়ার ফলে তাঁর দাঁতে ছোপ পড়েছিল। তিনি বিদেশি কায়দায় দাঁতে স্ক্রেপ করিয়েছিলেন, কিন্তু স্ক্রেপ করার ঠিক দু’দিনের মাথাতেই শুরু হল দাঁত থেকে অনর্গল রক্ত পড়া, একই সঙ্গে প্রবল জ্বর, বেহুঁশ অবস্থা, অসহনীয় যন্ত্রণা। অনেক চিকিৎসা করেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ১৯১৬ সালের ২৮ আগস্ট মাত্র বাহান্ন বছর বয়সে হেমেন্দ্রমোহন বসুর মৃত্যু হয়।“
জন্মের সার্দ্ধশতবর্ষ বা মৃত্যুর শতবর্ষ কোনওটি পালন হয়েছে কিনা জানি না। তবে, এ রকম সফল কর্মবীরের প্রকৃত মূল্যায়ণ হয়নি। ময়মনসিংহ প্রাক্তনী‘-র তরফে তাঁকে শতকোটি প্রণাম।
ঋণ— ‘সববাংলায়’, উইকিপিডিয়া।